দেশে ১২ লাখ মানুষ ডিমেনশিয়া স্মৃতিভ্রংশতায় ভুগছে। তাদের প্রায় ৭৫ শতাংশই নারী। তবে সমালোচনা ও চক্ষু লজ্জার ভয়ে বিষয়টি আড়াল করে রোগীরা। ডিমেনশিয়ার যথাযথ চিকিৎসা আবিষ্কার না হওয়া নীবর মহামারী শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁও বিনিয়োগ ভবনে আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘ডিমেনশিয়া যত্ন ও নাগরিক মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়।
সেমিনারে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশিষ্ট গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আখতার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ২০২০ সালে ১১ লাখ ডিমেনশিয়া রোগী পাওয়া গেছে। এসব রোগীদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৮০ হাজার, যা ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। এছাড়াও নারী ডিমেনশিয়া রোগী রয়েছে ৮ লাখ ৩০ হাজার, যা ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২৫ সালে এই রোগীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৭ হাজারে পৌঁছাবে।
২০১৫ সালের বিবিএসের ডাটা বলছে, অন্তত ৭২ শতাংশ নারী তাদের স্বামী কর্তৃক নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হোন। কিশোরীদের মধ্যেও অন্তত ৪২ শতাংশ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। এই নির্যাতন শুধু শারীরিক নয়, মানসিক, দৈহিক প্রভাব ফেলে। নির্যাতনের কথা তারা সহজেই ভুলে যেতে পারে না। এমনকি গর্ভবতী নারীকেও নানাভাবে নির্যাতন করা হয় । ডিমেনশিয়া রোগের পেছনে এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব তৈরি করে।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালের আমরা যেই সংখ্যক ডিমেনশিয়া রোগী পেয়েছি, তারমধ্যে মাত্র একভাগ পুরুষ, আর বাকি তিনভাগই নারী। নারীরা আলজাইমারে ভোগে। নারীরা রিপ্রোডাক্টিভের কারণেও ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। এই অবস্থায় নারীদের এই রোগ থেকে সুরক্ষায় আমাদেরকে সামাজিক সচেতনতায় গুরুত্ব দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ডিমেনশিয়ার নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে আরও গবেষণা করা উচিত। সঠিক চিত্রটি পেলে রোগীদের সেবা নিশ্চিত করা সহজ হবে। চিকিৎসাখাতে আমরা নানা বিষয় গবেষণা করি। এক্ষেত্রে ডিমেনশিয়ার উপর গুরুত্ব দিয়ে গবেষণার দরকার আছে। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হাসান। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান নাসরিন আফরোজ।