English

30 C
Dhaka
বুধবার, মার্চ ১২, ২০২৫
- Advertisement -

দাঁত ও মুখগহ্বরের যত্ন নেবেন যেভাবে

- Advertisements -
ডা. সিকদার নাজমুল হক: দাঁত ও মুখগহ্বরের জন্য ক্ষতিকর বদভ্যাসগুলোর অন্যতম ধূমপান। ধূমপায়ী দাঁত ও মুখের সঠিক যত্ন না নিয়ে দাঁতের রোগের ঝুঁকি বয়ে আনে। ধূমপানে তামাকের নিকোটিনের প্রভাবে দাঁতে দাগ পড়ে। দাঁতে পাথর বা ক্যালকুলাস ও ডেন্টাল প্ল্যাক নামক জীবাণুর আস্তর জমার আশঙ্কা বাড়ে।

দাঁত ও মুখগহ্বরের যত্নে করণীয় : ধূমপান ও তামাক চিবানোর অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। প্রতি তিনমাস অন্তর দাঁত ও মুখগহ্বর পরীক্ষা করাতে হবে। সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসা করাতে হবে দ্রুত। ধূমপায়ীর নিয়মিত দাঁতের স্কেলিং করিয়ে নেওয়া জরুরি। দিনে দুবার দাঁত মাজতে হবে। ব্যবহার করতে হবে ফোস। জীবাণুরোধী মাউথওয়াশও ব্যবহার করা যেতে পারে। ধূমপানে মুখগহ্বরে ক্যানসারের সূত্রপাত ঘটল কিনা, তা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি। ধূমপায়ীর মাড়ি থেকে নিয়মিতভাবে রক্ত পড়লে, মুখের ভেতরে লাল, সাদা বা গাঢ় রঙের কোনো দাগ দেখা দিলে, মাড়ি, ঠোঁট বা মুখগহ্বরের কোনো ফোলা বা গোটা দেখা দিলে, মুখের ভেতরে ব্যথা, অসারতা বা অনুভূতিহীনতা সৃষ্টি হলে কিংবা মুখগহ্বর, মাড়ি বা ঠোঁটে দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরেও শুকাচ্ছে না- এমন কোনো ঘা থাকলে ক্যানসারের সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে তা পরীক্ষা করাতে হবে। ধূমপানে মুখগহ্বর শুষ্ক হয়ে স্বাভাবিক লালা নিঃসরণ কমে যায়। ফলে দাঁতে জমা খাদ্যকণিকা সহজে পরিষ্কার হতে পারে না, বিস্তার লাভ করে ব্যাকটেরিয়া।

ধূমপানে মুখগহ্বরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, যা ব্যাকটেরিয়োর বিস্তারে সহায়ক। ফল হিসেবে দাঁতে দেখা দেয় ক্যারিজ বা দন্তক্ষয় রোগ, মাড়িরোগ, ্এমনকি মুখের দুর্গন্ধ। ধূমপানজনিত মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য সবার আগে দরকার ধূমপান বন্ধ করা। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ ও মাউথওয়াশ ব্যবহারে মুখগহ্বরে জমা হওয়া ধূমপানজনিত ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান পরিষ্কার হয়ে মুখের দুর্গন্ধ কমে আসতে পারে।

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য চিবোনো যেতে পারে চুইংগাম। ধূমপানে দাঁতের অ্যানামেল নামক বাইরে আবরণে জমা হয় ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান, বিবর্ণ হয়ে পড়ে দাঁত। স্কেলিং করে দাঁতে জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান পরিষ্কার করে ফেলা যায়। দাঁত সাদা করার টুথপেস্ট বাজারে পাওয়া যায়, দাঁতের স্বল্পমাত্রার বিবর্ণতার ক্ষেত্রে এটি কাজে আসতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে দাঁতের ব্লিচিং করানোর দরকার হতে পারে। ব্লিচিং উপাদানে রয়েছে হাউড্রোজেন পারঅক্সাইড বা কার্বামাইড পারক্সাইড, যা বিবর্ণ দাঁত সাদা করতে পারে। ব্লিচিং করানোর জন্য যেতে হবে ডেন্টাল ক্লিনিকে। ঘরে ব্যবহারের জন্য ‘ব্লিচিং কিট’ ও বাজারে কিনতে পাওয়া যায় আজকাল।

ধূমপায়ীদের ঠোঁট কালো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই তাদের ঠোঁটের যত্নে কিছু উপদেশ মেনে চলা উচিত। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত। এতে শরীর থেকে ধূমপানজনিত বিষাক্ত উপাদান বেরিয়ে যাবে। লিপ বাম বা লিপ জেল ব্যবহার করে ঠোঁট আর্দ্র রাখতে হবে। লিপ বাম বা লিপ জেল এ থাকতে হবে সানস্ক্রিন যা সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি প্রতিরোধ করতে পারে। সপ্তাহে একদিন ঠোঁটে লেবুর রস লাগালে তা ঠোঁটের কালো রঙ হালকা করতে সাহায্য করতে পারে। মধু ও বেকিং সোডা মিশিয়ে ঠোঁটে প্রলেপ দেওয়া যেতে পারে সপ্তাহে একদিন। কারণ মধুতে রয়েছে আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদান। আর বেকিং সোডায় রয়েছে রঙ হালকা করার ব্লিচিং উপাদান। ধূমপায়ী ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ খাবেন। তাতে ঠোঁটের ক্ষতিগ্রস্ত কোষ পুনর্জীবিত হতে পারে।

লেখক : ডেন্টাল স্পেশালিস্ট; তায়েফ ডেন্টাল হাসপাতাল

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন