English

26 C
Dhaka
শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

ডায়াবেটিস রোগীদের জীবনযাত্রা সহজ করছে প্রযুক্তি

- Advertisements -

এক বছর আগে ফেলিনার ডায়াবিটিস টাইপ ওয়ান ধরা পড়েছে। একটি অ্যাপের মাধ্যমে তার ইনসুলিনের ডোজ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

ফেলিনার মা আনে ফারেনহলৎস বলেন, ‘এবার আমরা দেখছি, দুপুরের খাবারের পর মাত্রা উপরে চলে গেছে। কার্বোহাইড্রেটের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে, যে সে সোয়া এগারোটার মধ্যেই খেয়েছে। প্রত্যাশা অনুযায়ী শর্করার মাত্রা আবার কমে গেছে।’

ফেলিনার গ্লুকোজের মাত্রা সারা দিন ভালোই ছিল। সবকিছু ঠিকমতো চলছে। এবার বাসায় ফেরার পালা। ইনজেকশন দিলে ব্যথা হয়, ঝামেলাও বটে। তবে দিনে আট, দশ, বারো বার ব্লাড সুগার মাপা আনে ও ফেলিনার মতো ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু এখন এক বা দুই দিন পর পর মাপলেই চলে। তাদের পরিমাপের যন্ত্র নিখুঁতভাবে কাজ করছে কিনা, শুধু সেটা নিশ্চিত করার জন্যই এই কাজ করতে হয়।

ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ উলরিকে টুয়র্মের কল্যাণেই আনে ফারেনহলৎস এই প্রযুক্তির কথা জানতে পারেন। অন্তঃসত্ত্বা হবার আগে থেকেই উলরিকে টুয়র্ম তার চিকিৎসা করে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘ডায়াবেটিস প্রযুক্তি অবিশ্বাস্য গতিতে ধারাবাহিকভাবে গ্লুকোজ মনিটরিং-এর উন্নতি ঘটাচ্ছে। মানুষের জীবনের মানের জন্য সেটা বড় এক আশীর্বাদ।’

গত কয়েক বছরের সবচেয়ে বড় অগ্রগতি হলো, ধারাবাহিক গ্লুকোজ মনিটারিং-এর তথ্যের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে সরাসরি এক ইনসুলিন পাম্প নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে।

আনে বলেন, ‘আমি সহজেই এই পাম্প ব্যবহার করতে পারি, সামনেই সেটা রয়েছে। ছোট হওয়ায় আর কোনো সমস্যা নেই।’

অটোম্যাটিক ইনসুলিন ডোজিং বা এআইডি প্রণালী একটি লাইভ পরিমাপ যন্ত্রের সাথে এক ইনসুলিন পাম্পের সংযোগ ঘটায়। স্মার্টফোনের মতো ডিভাইসে এক অ্যালগোরিদম সেটা নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর গ্লুকোজের মাত্রা মেপে সেই তথ্যের ভিত্তিতে অ্যালগোরিদম পাম্পের মাধ্যমে ঠিক ততটা ইনসুলিন শরীরে প্রবেশ করায়, যাতে তার মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ৭০ থেকে ১৮০ মিলিগ্রামের মধ্যে থাকে। তা সত্ত্বেও হাইপারগ্লাইসেমিয়া বা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে রিসিভিং ডিভাইস অ্যালার্ম বাজায়, যাতে ঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া যায়। ফেলিনার এবার মিষ্টি কিছু খেতে হবে।
ফেলিনার মা আনে ফারেনহলৎস বলেন, ‘সিস্টেম এত আগে সতর্ক করে দেয়, যে সে কখনোই পুরোপুরি কাহিল হয়ে পড়ে না এবং সে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কবলে পড়ে না। শুধু তার অদ্ভুত অনুভূতি হয়। তবে কাঁপুনির মতো অন্য উপসর্গ বা অজ্ঞান হয়ে পড়ার মতো মারাত্মক অবস্থা এখনো ঘটেনি।

ফেলিনা ছোট হলেও লাফঝাঁপ করতে, বিশেষ করে অ্যাক্রোব্যাটিক্স খুব ভালোবাসে। এআইডি সিস্টেম সে সব সামলে নেয়।

ফেলিনা বলে, শুধু রাতে নতুন করে লাগানো হলে সকালে ব্যথা হয়।

তার ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ব্লাড সুগার পরিমাপ যন্ত্রের বাজারের গতি প্রকৃতির উপর কড়া নজর রাখেন। আনে ও তার মেয়ের কাছে অত্যন্ত আধুনিক সরঞ্জাম রয়েছে।

উলরিকে টুয়র্ম বলেন, ‘এই প্রণালী বর্তমানে সবচেয়ে উন্নত বলে আমি মনে করি। কারণ এটাই একমাত্র সিস্টেম, যেটি অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে। ফলে ফেলিনা শুরু থেকেই সেটি ব্যবহার করতে পারছে।’

এই ধরনের ডায়াবেটিস এখনো নিরাময় করা সম্ভব নয়। মায়ের মতো ফেলিনাকেও হয়তো সারা জীবন এই রোগ সামলাতে হবে। কিন্তু স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শরীরে প্রয়োজনীয় মাত্রায় ইনসুলিন ঢোকানোর প্রণালী তাদের জীবন অনেক সহজ করে তুলছে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন