এ ছাড়া শীতে অনেকেরই হাত-পা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা হয়ে যায়। বিভিন্ন জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির চারপাশের ত্বক খুব বেশি ঠাণ্ডা হলে স্নায়ুর প্রান্তগুলোর সংবেদনশীলতা বেশি হয়। কোনও কিছুর সঙ্গে আঘাত বা স্পর্শ লাগলে বেশি ব্যথা অনুভূত হয়। শীতকালে অনেক ক্ষেত্রে ভিটামিন-ডি’র পরিমাণ হ্রাস পায়, যা মুড বা ভাব, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, পেশি কামড়ানো, হাড় ও জয়েন্টের সমস্যা তৈরি করে।
করণীয় : শীতে যথেষ্ট গরম কাপড় পরুন, বিশেষ করে পায়ে মোজা ও হাতে গ্লাভস পরার চেষ্টা করুন। কারণ হাত-পায়ের আঙুলে প্রান্তিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। ঠাণ্ডা কমাতে গরম সেঁক নেওয়া যায়। শীতে ড্রাই বা শুষ্ক সেঁক ভালো। তবে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির রোগীরা সতর্ক থাকবেন। কারণ তাদের স্নায়বিক অনুভূতি কমে যায় বলে যথেষ্ট তাপ হলেও বুঝতে পারেন না এবং অতিরিক্ত গরমে পা পুড়িয়ে ফেলতে পারেন। রাতে কম্বল বা লেপের নিচে হট ব্যাগ নিয়ে ঘুমাতে হলে আগে তাপমাত্রা পরখ করে নিন বা হালকা গরম পানি ভরে নিন। শীতে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল, সানবাথ ইত্যাদি বেশ কার্যকর। বয়স্ক ও ডায়াবেটিসের রোগীরা রুম হিটার ব্যবহার করতে পারেন।
তবে এতে পরিবেশ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে শরীর পানিশূন্য হতে পারে। তাই ঘরের কোণে পানি রাখা ভালো। ক্যাফেইন শরীরকে পানিশূন্য করে রক্ত চলাচল আরও কমিয়ে দেয়। ধূমপানও করবেন না। যথেষ্ট পানি পান করুন। শীতে আলসেমি ও ব্যথাবেদনা বয়স্কদের কাবু করে ফেলে। লেপের নিচে শুয়ে থাকতে মন চায় বেশি। কিন্তু বিপাকক্রিয়া বাড়াতে ও তাপ উৎপাদন করতে সচল থাকতে হবে। বাইরের ঠাণ্ডা এড়াতে চাইলে ঘরের ভেতরে হাঁটুন বা ইনডোর অ্যাকটিভিটি করুন। হাত-পায়ের ব্যায়াম করুন। এতে রক্ত চলাচল বাড়বে। যথেষ্ট ভিটামিন-ডি পেতে দিনের একটা সময় বারান্দা বা ছাদে রোদে অবস্থান নিন। ভিটামিন-ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যায়। যদি ব্যথার তীব্রতা বাড়ে, হাত-পায়ের রঙ পরিবর্তিত হয়ে নীলচে হয় বা সেঁক নিতে গিয়ে ত্বকে পরিবর্তন চোখে পড়ে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক : অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল
চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী, ঢাকা