বিভিন্ন রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ জ্বর। এটা কোনো রোগ নয়। বিভিন্ন কারণে আমাদের জ্বর হয়ে থাকে। সামান্য ঠাণ্ডা লাগলে কিংবা শরীরের কোথাও জীবাণুর সংক্রমণ বা ইনফেকশন হলেও জ্বর হয়।
অসুস্থ রোগীর ৯৯.১৪ ফারেনহাইটই জ্বর হিসেবে গণ্য হয়। বড়দের যেসব কারণে জ্বর হয়, তার সবকটি কারণে শিশুদেরও জ্বর হতে পারে। বড়দের জ্বর সচরাচর সুনির্দিষ্ট কারণেই হয়ে থাকে। অপরিণত স্নায়ুতন্ত্র তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারার কারণে অনেক সময় শিশুদের তীব্র জ্বর হয়।
লক্ষণ
♦ শরীরের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঁপুনি
♦ খিদের অভাব
♦ ডিহাইড্রেশন
♦ ডিপ্রেশন
♦ হাইপার-অ্যালগেসিয়া বা অতি অল্পেই অতিরিক্ত যন্ত্রণাবোধ
♦ ঘুম ঘুম রেশ
করণীয়
তীব্র জ্বর যে কারণেই হোক তা কমানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র জ্বর অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে; বিশেষ করে শিশুদের জ্বরজনিত খিঁচুনি হতে পারে, যা মস্তিষ্কের ওপর উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাবে হয়ে থাকে।
কুসুম গরম পানি দিয়ে ভেজানো কাপড় ব্যবহার করে হাত-পা মুছে দেওয়া যেতে পারে। জলপট্টি ও মাথায় পানি ঢালার মাধ্যমেও জ্বর কমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল একটি কার্যকর ওষুধ।
যেসব রোগী মুখে ওষুধ খেতে পারবে না, তাদের জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করা যেতে পারে। সাপোজিটরি তুলনামূলক দ্রুত কাজ করে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে, বয়স ও ওজন হিসেবে মাত্রানুযায়ী যথাস্থানে সম্পূর্ণরূপে প্রয়োগ হয়েছে কি না। অতিরিক্ত প্রয়োগে লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসা
জ্বর হলে শরীরে পানি স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। এ জন্য রোগীকে পানি ও তরল খাবার খেতে দিতে হবে।
চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে লক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভিত্তিতে ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর নির্ণয় হলে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। ভাইরাসজনিত জ্বর নির্দিষ্ট সময় পরে স্বাভাবিকভাবেই সেরে যায়।
জ্বরের কারণ জানতে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণে সাধারণত তীব্র জ্বর হয় না। সে ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় সাপেক্ষে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. শাহেদ সাব্বির আহমেদ
আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার
কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুর