রক্তে শর্করা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়া, যা প্রথম গর্ভাবস্থায় ধরা পড়ে, তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলে। প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল থেকে কিছু হরমোন আসে, যা এই ব্লাড সুগার বাড়ানোর কারণ।
কখন আমরা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলব?
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নির্ণয় করতে খালি পেটে ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার পর ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হবে। একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করলে হবে না।
নিচের যেকোনো একটি ব্লাড সুগার পেলে আমরা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলব—
♦ খালি পেটে ৫.১ মিলি মোল/লি-এর সমান বা বেশি
♦ গ্লুকোজ খাওয়ার এক ঘণ্টা পর ১০ মিলি মোল/লি-এর সমান বা বেশি
♦ গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর ৮.৫ মিলি মোল/লি-এর সমান বা বেশি।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে খাবারদাবার
ডায়াবেটিক রোগীদের মতো খাবার হবে; চিনি, মিষ্টি বাদ দিতে হবে। দুই বেলা রুটি, এক বেলা ভাত খেতে পারলে ভালো। তিন বেলা প্রধান খাবারের পাশাপাশি তিন বেলা হালকা নাশতা খাবেন—সকাল ১১টায় একবার, বিকেল ৪টায় এবং রাতে শোবার আগে। নাশতা হিসেবে মুড়ি, মিষ্টি ছাড়া বিস্কুট, মিষ্টি কম ফল, যেমন—সবুজ আপেল, পেয়ারা, নাশপাতি খেতে পারেন। আরো বিস্তারিত জানার জন্য পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
চিকিৎসা
গর্ভাবস্থায় মুখের ওষুধগুলো বাচ্চার জন্য নিরাপদ নয়, ইনসুলিনই সবার জন্য ভালো ও নিরাপদ। হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ইনসুলিন নেওয়া লাগতে পারে। বাচ্চা হয়ে গেলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আর ইনসুলিন লাগে না।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকলে কি নরমাল ডেলিভারি করা যাবে? ডায়াবেটিস নরমাল ডেলিভারির জন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়। বাচ্চা ও মায়ের অন্য সব কিছু ভালো থাকলে নরমাল ডেলিভারি করা যাবে।
ফলোআপ
যাঁদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকে, তাঁদের পরবর্তী সময়ে ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বাচ্চা হওয়ার চার থেকে ১২ সপ্তাহ পর আবার ডায়াবেটিসের ডাক্তার দেখাতে হবে। যদি নরমাল থাকে প্রতিবছর একবার ডায়াবেটিস মেপে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।