বিশ্বব্যাপী দাপট দেখাচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। দ্রুত রূপ পরিবর্তন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে সুনামির গতিতে। ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। আর মৃত্যু ৩৩ লাখ ১৭ হাজার।
কোনওভাবেই রাশ টানা যাচ্ছে না সংক্রমণের। অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে কাদের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি? সম্প্রতি এ নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেছে কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)।
সেখানে জানানো হয়েছে যাদের রক্তের গ্রুপ AB বা B, অন্য ব্লাড গ্রুপের মানুষের থেকে তাদের করোনা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
গবেষণায় এও জানানো হয়েছে, যাদের রক্তের গ্রুপ O, তাদের সংক্রমণের সম্ভাবনা সবচেয়ে কম। যদিও বা সংক্রমিত হন, তবে তারা হবেন উপসর্গহীন বা তাদের মধ্যে খুব অল্প মাত্রায় করোনার উপসর্গ দেখা দেবে।
সমীক্ষায় এও উঠে এসেছে, যারা আমিষ খান তারা অনেক বেশি সংবেদনশীল। অপেক্ষাকৃত নিরামিশাষীদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা কম। কারণ তারা হাই ফাইবারযুক্ত খাবার খান। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তাদের বেশি। ফাইবার সম্বৃদ্ধ ডায়েট অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি হয়। ফলে সংক্রমণের পরবর্তী সমস্যাগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে এটি সাহায্য করে। এমনকি সংক্রমণ থেকেও এই খাবার মানুষকে অনেকটাই সুরক্ষিত করে।
ভারতে ১০ হজার মানুষের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। ১৪০ জন চিকিৎসক এই নমুনাগুলো পরীক্ষা করেন। সমীক্ষায় জানা যায়, সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটেছে AB ব্লাড গ্রুপের মানুষের মধ্যে। তারপরই রয়েছে B ব্লাড গ্রুপের মানুষরা। সবচেয়ে কম সংক্রমণ O ব্লাড গ্রুপের মধ্যে হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের জিনগত বৈচিত্র্যের উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে। যেমন যাদের থ্যালাসেমিয়া থাকে, তাদের ম্যালেরিয়া কম হয়। ঠিক তেমনভাবেই একই পরিবারের হয়তো সবার করোনা হয়েছে। কিন্ত একজন সংক্রমিত হন না। এটা সবটাই জেনেটিক স্ট্রাকচারের উপর নির্ভর করে।
O ব্লাড গ্রুপের মানুষের মধ্যে B বা AB ব্লাড গ্রুপের থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। যদিও এ নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা ও অনুসন্ধান প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তারা এও সাবধান করে দিয়েছেন, এর মানে এই নয় যে O ব্লাড গ্রুপের কারো কারোনা হলে তিনি করোনাবিধি মেনে চলবেন না। তাদের মনে রাখতে হবে তারা কিন্তু সম্পূর্ণ সুরক্ষিত নন। ভাইরাস তাদের শরীরে ঢুকতে পারে এবং সংক্রমিতও করতে পারে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে পরিস্থিতি।
সূত্র: ইন্ডিয়া ডটকম