English

25 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

স্বাস্থ্যগত সমস্যার মধ্যে ভিটামিন-ডি এর অভাব অন্যতম

- Advertisements -

বর্তমান বিশ্বে স্বাস্থ্যগত সমস্যার মধ্যে ভিটামিন-ডি এর অভাব অন্যতম। আগে যদিও মনে করা হতো বাংলাদেশের মতো অধিক সূর্যালোক সমৃদ্ধ দেশে ভিটামিন-ডি এর অভাব হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, কিন্তু অধুনা গবেষণা ও আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে যে, আমাদের দেশেও ভিটামিন-ডি এর অভাব এখন ব্যাপক এবং বেশির ভাগ মানুষই এর দৃশ্যমান বা অদৃশ্য জটিলতার শিকার।

ভিটামিন-ডি কি?

নাম থেকেই জানা যায়, এটি এক ধরনের ভিটামিন যা মূলত শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের স্বাভাবিক মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের হাড়কে শক্তিশালী রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া শরীরের মাংসপেশিকে সক্রিয় রাখা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন-ডির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত।

কোথায় পাওয়া যায়?

আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, খাবারের মধ্যে ভিটামিন-ডি এর জোগান খুবই কম। কেবল কতিপয় তৈলাক্ত মাছ, কডলিভার অয়েল, মাশরুম ও ডিমের কুসুমে সীমিত পরিমাণে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়। তবে উন্নত দেশে কিছু খাবার ফর্টিফিকেশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ভিটামিন-ডি সরবরাহ করা হয়। সেই ক্ষেত্রে শরীরের প্রয়োজনের বেশিরভাগ ভিটামিন-ডি আসে সূর্যালোক থেকে। তাই স্থান, কাল আর পাত্র ভেদে শরীরে ভিটামিন-ডি সংগৃহীত হয় ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায়।

বিশ্ব গোলার্ধের দক্ষিণে যারা বসবাস করেন, তারা ভিটামিন-ডি পান বছরজুড়ে। আর উত্তরে অবস্থিত দেশের লোকজন পায় মাত্র মার্চ থেকে অক্টোবর এই ছয় মাস। সূর্যালোক থেকে বেশি ভিটামিন-ডি পাওয়া যায় দুপুর বেলা, যখন সূর্য সরাসরি আমাদের মাথার ওপর থাকে। শরীরের চামড়া যাদের সাদা, তাদের শরীর সহজেই পেয়ে যায় ভিটামিন-ডি। যাদের চামড়া একটু কালো, ভিটামিন-ডি সংগ্রহ করতে তাদের অনেক বেশি সময় ধরে সূর্যালোকের সংস্পর্শে থাকতে হয়।

বৈশ্বিক পট ও জীবনযাত্রার বিভিন্ন পরিবর্তনের ফলে মানুষ এখন আর সহজেই সূর্যালোক থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন-ডি গ্রহণ করতে পারছে না, কারণ এর জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করা দরকার। কখন, কীভাবে ও কত সময়ের জন্য সূর্যস্নান করলে দিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন-ডি পাওয়া যাবে, তা নিয়ে কিছু মতভেদ থাকলেও মোটামুটিভাবে বলা যায়-

সকাল ১১টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে,  শরীরের সম্ভাব্য বেশির ভাগ অংশ, একটানা ১৫-৩০ মিনিট (সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন) সরাসরি সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আনতে পারলে লক্ষ্য অর্জিত হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় ভিটামিন-ডি পেতে কারও কারও ক্ষেত্রে তা ৩০ মিনিট থেকে ৩ ঘণ্টাও (পরিবেশ বুঝে) লাগতে পারে।

কারা ঝুঁকিতে রয়েছে?

শিশু ও বয়স্করা মূলত বেশি ঝুঁকিতে, কারণ মায়ের দুধে ভিটামিন-ডি থাকে খুব কম এবং বয়স্কদের শরীরে সূর্যালোক থেকে ভিটামিন-ডি তৈরির ক্ষমতা কমে যায়। গর্ভবতী মায়ের শরীরে এর অভাব থাকলে শিশু গর্ভে থাকতেই বা জন্মের পর পরই ভিটামিন-ডি এর অভাবজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যারা সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসেন খুব সময় অথবা শরীরের বেশির ভাগ অংশই কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন এবং যারা অন্ত্র, কিডনি বা লিভারের রোগে ভুগছেন তাদের এর অভাব দেখা যায়।

অভাবজনিত গুরুতর সমস্যাগুলো কি কি?

মূলত শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা কমে যায়, ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যায়। রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা অনেক কমে গেলে শিশুর খিঁচুনি হতে পারে। এ ছাড়া শিশুদের ক্ষেত্রে রিকেটস নামক রোগ হয়, যাতে পা বেঁকে যাওয়া, শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়াসহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এ রোগের নাম অস্টিওম্যালেসিয়া, যাতে হাড় দুর্বল হওয়ার কারণে  ব্যথা অনুভূত হয় বা হাড় ভেঙে যায়। স্বল্প মাত্রার ঘাটতি হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, মাংসপেশি ও হৃৎপিন্ডের ক্ষতি হতে পারে।

লেখক : শিশু হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন