শীতে ঠাণ্ডার সমস্যাগুলোর মধ্যে শ্বাসকষ্ট একটি। নাক বন্ধভাব, সর্দি, চোখে চুলকানি ও চোখ থেকে পানি পড়া, বুকে চাপ বোধ, কাশি, হাঁচি, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস ইত্যাদিকে শ্বাসকষ্টের উপসর্গ হিসেবে ধরা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্বাসকষ্ট নিজে কোনো রোগ নয়। এটি অন্যান্য রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়। শ্বাসকষ্ট সাধারণত দুই রকমের হয়। অ্যাকিউট বা তীব্র ধরণের, যা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তীব্র শ্বাসকষ্টে রূপান্তরিত হয়। এতে অতি দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
শীতকালে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার কারণ প্রধানত দুটি। তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে পরিবেশের শুষ্কতার কারণে বাতাসে জলীয়বাষ্পের হার বা আর্দ্রতা কমে যায়। এ কারণে জীবাণু সহজেই শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের ভেতরে প্রবেশ করে। কিন্তু শরীর থেকে তা সহজে বের হয় না। তখন জীবাণু বংশ বিস্তার করে ও শ্বাসতন্ত্র আক্রমণ করে।
শ্বাসকষ্ট হলে যেসব খেয়াল রাখবেন
• শৈশব বা বয়ঃসন্ধিকালের আগে থেকে যদি শ্বাসকষ্ট থেকে থাকে, তা সাধারণত অ্যাজমার জন্য হয়। এ ধরনের রোগীর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ধরণের শ্বাসকষ্টে ভোগেন।
• সাধারণত অ্যাজমা বা হাঁপানিজনিত শ্বাসকষ্ট রাতে বা ভোরে বেশি হয়। আবার কাশির মতো শ্বাসতন্ত্রের কিছু অসুখের প্রকোপও রাতে বাড়ে।
• শ্বাসকষ্টের সঙ্গে যদি জ্বর থাকে, বুকে ব্যথা হয়, শ্বাস নিতে শোঁ শোঁ শব্দ হয়, তা সাধারণত নিউমোনিয়ার মতো ফুসফুসের মারাত্মক জটিলতার জন্য হয়।
• কিডনির কোনো জটিলতা আছে এমন ব্যক্তির যদি হঠাৎ শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয় তাহলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ কিডনি জটিলতায় অনেকের রক্তে এসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে শ্বাসকষ্টসহ প্রাণঘাতি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
• যাদের শ্বাসের সমস্যা রয়েছে, তারা বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করলে সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।
• এই সময় ঘরের ভেতরও পরিষ্কার রাখা উচিত। না হলে ঘরের ধুলাও শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
• ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে, তারা যদি শীতে ধূমপান করেন, তাদের ফুসফুসের ওপর চাপ পড়ে।
• যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তারা শীতে সবসময় হালকা কুসুম গরম পানি পান করা বা ব্যবহারের চেষ্টা করবেন।
শ্বাসকষ্ট যদি দীর্ঘদিন ধরে হতে থাকে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।