এখন প্রশ্ন হলো, কেন সবার অঞ্জনি হয় না, আবার কারও কারও কিছুদিন পরপরই হয়। বিভিন্ন কারণে এই সংক্রমণ বা প্রদাহের ঝুঁকি বাড়ে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, চোখের পাতায় খুশকি বা ব্লেফারাইটিস, ত্বকের সমস্যা (যেমন সেবোরিক ডার্মাটাইটিস, রসাসিয়া একনি ইত্যাদি)।
এ ছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল, হরমোনের প্রভাব, শুষ্ক ত্বক, চোখের স্ট্রেস (রাত জাগা বা দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে কাজ করা), চোখে বারবার হাত দিয়ে রগড়ানো বা চুলকানো ইত্যাদি কারণে অঞ্জনির ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রসাধনীর কারণেও এই ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
উপসর্গ : পাপড়ির গোড়ায় ছোট ছোট ফুসকুড়ির মতো দেখা দেয়। ব্যথা থাকে ও স্পর্শ করলে ব্যথা অনুভূত হয়। অনেক সময় লালচে ভাব পরিলক্ষিত হয়। পাপড়ির গোড়ায় ক্রাস্ট বা শক্ত ময়লা বিশেষ জমতে পারে। অঞ্জনির মতো আরও একটি সমস্যা হলো কেলাজিয়ন। এটি হলো মেবোমিয়ান গ্রন্থির প্রদাহ। এটি কোনো সংক্রমণ নয়। তাই এতে কোনো ব্যথা থাকে না। অঞ্জনি এক থেকে দুই সপ্তাহে সেরে গেলেও কেলাজিয়ন অনেক সময় কয়েক মাস বা তারও বেশি সময় একই রকম থাকতে দেখা যায়।
চিকিৎসা : হট কমপ্রেসন বা গরম সেঁক দিলে অনেক সময় উপকার পাওয়া যায়। অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ডোজ মেনে ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে ড্রপের পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে।
করণীয় : চোখের পাতার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। বিশেষ করে যাদের ব্লেফারাইটিস বা খুশকির সমস্যা আছে, তাদের চোখের পাতা বেবি শ্যাম্পু দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। আর মাথায় খুশকি থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। হালকা গরম পানিতে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে চিপে চোখের পাতার ওপর কয়েক মিনিট ধরে রাখতে হবে। দৃষ্টির সমস্যা থাকলে পরীক্ষা করে প্রয়োজনে চশমা ব্যবহার করতে হবে। রাত জেগে কাজ করার অভ্যাস ছাড়তে হবে। প্রসাধনীর ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। দিন শেষে ভালো করে মুখমণ্ডল ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে, যাতে প্রসাধনীর অবশেষ চোখের পাতার গোড়ায় লেগে না থাকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। চোখের যে কোনো উপসর্গ দেখা দিলেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখা ভালো।
লেখক : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
অধ্যাপক, মার্কস মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা
চেম্বার : আইডিয়াল আই কেয়ার সেন্টার
৩৮/৩-৪, রিং রোড, শ্যামলী, ঢাকা