বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোন ছাড়া যেন চলেই না। প্রায় সব বয়সীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। অনেকেই অতিরিক্ত এই যন্ত্রটি ব্যবহার করেন। অনেকেই মনে করেন অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার ব্রেন ক্যানসারের কারণ। এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষকদের দেয়া তথ্য।
গবেষকরা মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে ক্যানসার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে জানান, একজন মানুষ ক্যানসার হবে কিনা তার সঙ্গে মোবাইল ফোনের সরাসরি সম্পর্ক নেই। এমনকি অতিরিক্ত সময় ফোন ব্যবহারের কারণেও ব্রেন ক্যানসার হয় না।
অস্ট্রেলিয়ান রেডিয়েশন প্রোটেকশন অ্যান্ড নিউক্লিয়ার সেফটি এজেন্সি (অর্পানসা)-এর নেতৃত্বে ৫ হাজারের বেশি কেস নিয়ে গবেষণা করা হয়। সেই এজেন্সির প্রধান লেখক কেন ক্যারিপিডিস একটি রিলিজে বলেন, আমরা এই পরীক্ষার পর যে সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছেছি সেটা হল, মোবাইল ফোন মস্তিষ্কের ক্যানসার বা মাথা ও ঘাড়ের ক্যানসারের কারণ নয়। মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়াই চলেছে সেই তুলনায় বলা যায় ব্রেন ক্যানসারের হার স্থিতিশীল রয়েছে।
এই পর্যালোচনাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন গবেষকরা। কারণ, দীর্ঘ বছর ধরে মোবাইল ফোনের মতো বেতার প্রযুক্তি ডিভাইসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে মানুষের মনে ভাবনা আছে। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী রেডিও-ফ্রিকোয়েন্সি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন নির্গত করে, যা রেডিও তরঙ্গ নামেও পরিচিত। বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির জন্যই ব্রেন ক্যানসার হয়। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার (আইএআরসি) ২০১১ সালে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এবং ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডকে সম্ভাব্য কার্সিনোজেন হিসাবে মনোনীত করেছিল।
এই গবেষণার জন্য ৫ হাজার ৬০ জনের উপর পরীক্ষা চালান । ২০১১ সালে যখন আইএআরসি রেডিও-ফ্রিকোয়েন্সি এবং ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডকে সম্ভবত কার্সিনোজেনিক হিসাবে বলেছিল তখন মোবাইল ফোনের ব্যবহার করা এবং না ব্যবহার করা ব্যক্তিদের বিষয়টিও উঠে আসে। পরবর্তীতে দেখা যায় যদি কোনো ব্যক্তি ১০ বছর ধরেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন তার পরেও ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি হয় না। গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, কয়েক দশক ধরে মোবাইল ফোন-সহ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে চললেও সে তুলনায় ব্রেন ক্যানসার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি।