English

21 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

মৃগী রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা

- Advertisements -

অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী: মৃগী রোগ কি: মৃগী স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতাজনিত একটি রোগ। সুস্থ স্বাভাবিক একজন ব্যক্তি যদি হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে কাঁপুনি বা খিঁচুনির শিকার হয়, চোখ-মুখ উল্টিয়ে ফেলে কিংবা কোনো শিশুর চোখের পাতা স্থির হয়ে যায়, এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে অথবা মানসিকভাবে সুস্থ কোনো ব্যক্তি যদি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে তবে তাকে মৃগী রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

মানবদেহের সমস্ত কার্যাবলি পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে। কোনো কারণে মানবদেহের কার্য পরিচালনাকারী মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের উদ্দীপক ও নিবৃত্তিকারক অংশদ্বয়ের কার্যপ্রণালির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলে মৃগী রোগের লক্ষণসমূহ দেখা দিতে পারে।

মস্তিষ্কের অতি সংবেদনশীলতা ছাড়াও ব্রেইন টিউমার, স্ট্রোক, মাথায় আঘাত ও রক্তপাত, রক্তশিরায় সমস্যা, ব্রেইনের পুরনো ক্ষত, ইনফেকশন এবং মানসিক প্রতিবন্ধকতা থেকেও মৃগী রোগ দেখা দিতে পারে। মৃগী রোগের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বারবার খিঁচুনি ও এর উপসর্গে আক্রান্ত হওয়া।

মৃগী রোগের লক্ষণসমূহ: একজন মৃগী রোগীর মধ্যে নিম্নলিখিত যে কোনো একটি বা একাধিক লক্ষণ পরিলক্ষিত হতে পারে- হঠাৎ শরীরের কোনো অংশে খিঁচুনি শুরু হওয়া ও পর্যায়ক্রমে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়া, হঠাৎ নমনীয়ভাবে ঢলে পড়া, শরীর শক্ত হয়ে গিয়ে হঠাৎ পড়ে যাওয়া, হঠাৎ জ্ঞান হারানো, ঘন ঘন কাজে অমনোযোগী হয়ে পড়া, ছোট বাচ্চাদের শরীর হঠাৎ ঝাঁকি খাওয়া, হঠাৎ মাথা বা পিঠ কিংবা পুরো শরীর সামনে ঝুঁকে আসা, হাত থেকে হঠাৎ করে কিছু ছিটকে পড়া, হঠাৎ করে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করা এবং হাত, পা ও মুখের, অস্বাভাবিক নাড়াচাড়া শুরু হওয়া, হঠাৎ শরীরের কোনো অংশে ভিন্ন ধরনের অনুভূতি সৃষ্টি হওয়া।

খিঁচুনির সময় যা করা যাবে না: আতঙ্কিত বা ভীত হবেন না। খিঁচুনির সময় কোনো রূপ বাধা সৃষ্টি বা রোগীকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করবেন না, এতে রোগী এবং সাহায্যকারী উভয়ই আহত হতে পারে।
রোগীর মুখে চামড়ার জুতো বা চামড়ার তৈরি অন্য কিছু, লোহার শিক ইত্যাদি চেপে ধরা উচিত নয়। এতে রোগীর উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়।

রোগী পুরোপুরি সচেতন না হওয়া পর্যন্ত পানি বা অন্য কোনো পানীয় দেবেন না। সাধারণত খিঁচুনি দুই মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় না এবং এরপর রোগী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।

কখন চিকিৎসার প্রয়োজন: নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দিলে রোগীকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে- যদি খিঁচুনির স্থায়িত্ব পাঁচ মিনিটের বেশি হয়, যদি রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়, যদি রোগী একনাগাড়ে অনেকক্ষণ ধরে বিভ্রান্ত হয়ে থাকে কিংবা অচেতন থাকে, যদি খিঁচুনির সময়ে রোগী কোনোভাবে আহত হয়, যদি রোগী প্রথমবারের মতো মৃগীতে আক্রান্ত হয় বিস্তারিত জানার জন্য নিকটস্থ হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগ বা কোনো নিউরোলজিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

লেখক: অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতাল, ঢাকা।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন