রান্নাঘরের কাজে ছ্যাঁকা লাগা বা মাছ ভাজার তেল ছিটকে এসে হাতে, গলা বা মুখে ফোসকা পড়া খুব অস্বাভাবিক নয়। তবে এর বাইরেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাজি ফোটানো হয়। আর সে সময় একটু অসাবধান হলেই হাত-পা পুড়ে যেতে পারে। আর এমন পরিস্থিতিতে পড়লে অনেকেই বুঝতে পারেন না ঠিক কী করা উচিত। সবার প্রথমে চেষ্টা করতে হবে বাজি থেকে দূরে থাকার। আর একান্তই যদি তা না হয়, সেক্ষেত্রে হালকা সুতির জামাকাপড় পরুন। সিন্থেটিক কিছু পরবেন না। আর চেষ্টা করুন হাত শরীর থেকে দূরে রেখে বাজি ফোটানোর। তাতে বিপদের আশঙ্কা কমবে। তবে এরপরও যদি ত্বক পুড়ে যায়, সেক্ষেত্রে মেনে চলতে হবে কয়েকটি নিয়ম।
জেনে নিন নিয়মগুলো—
প্রথমেই ধুয়ে ফেলুন: বাজিতে হাত ও পায়ের কিছু অংশ পুড়ে গেলে বাড়িতেই তার চিকিৎসা করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে সবার প্রথমে জায়গাটা ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। চেষ্টা করুন পানির ট্যাপের তলায় হাত রেখে পানি দিয়ে জায়গাটা ধুয়ে নেওয়ার। তাতেই প্রাথমিক কাজ শেষ। এরপর সেই জায়গায় সিলভার নাইট্রেট জাতীয় অয়েন্টমেন্ট লাগান।
টুথপেস্ট লাগাবেন না: অনেকেই ক্ষত স্থানে টুথপেস্ট লাগান। আর এই ভুলটা করেন বলেই বিপদ বাড়ে। জায়গাটায় ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই চেষ্টা করুন সেখানে টুথপেস্ট না লাগানোর। এমনকি সেখানে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক মলমও লাগাবেন না। তাতেও সমস্যা হতে পারে। সেখান থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই পুড়ে গেলে অবশ্যই এই বিষয়টি মাথায় রাখার চেষ্টা করুন।
মুখ পুড়ে গেলে চিকিৎসকের কাছে যান: চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, যদি মুখের কোনো অংশ পুড়ে যায়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে সোজা হিসাব হলো- একটা কাগজের নোটের থেকে বড় অংশ পুড়ে গেলেই ডাক্তার দেখাতে হবে। তখন আর সমস্যা ফেলে রাখবেন না। এর পাশাপাশি বাচ্চাদের শরীরের কোনো অংশ পুড়ে গেলেও চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে। তা হলেই সমস্যাকে কাবু করে ফেলতে পারবেন।
চোখের সমস্যা ফেলে রাখবেন না: অনেক সময় বাজির ফুলকি চোখে ঢুকে যায়। তখন চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে থাকে। জয়াগাটা লাল হয়ে যায়। এমনকি দৃষ্টিশক্তিও কমে যেতে পারে। তাই এমন পরিস্থিতিতে সবার প্রথমে চোখে ঠাণ্ডা পানি দিন। তারপর দ্রুত চলে যান হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে নিজের সমস্যার কথা বলুন।
চিকিৎসা কী—
শরীরের অনেকটা অংশ পুড়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে ফ্লুইড বের হয়ে যায়। এ কারণে সবার প্রথমে রোগীকে ভালো পরিমাণে স্যালাইন দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি তাকে পেইনকিলার এবং অ্যান্টিবায়োটিকও দেওয়া হয়ে থাকে। তাতেই ধীরে ধীরে রোগী ঠিক হয়ে ওঠেন। তবে অনেকেই ভুল করে পোড়ার সমস্যা ফেলে রেখে দেন। তাতে বিপদ বাড়তে পারে। সংক্রমণ শরীরের একাধিক অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব সাবধান হয়ে যান।