পাঁচ বছর হলো করোনাকাল পার হয়েছে। এবার নতুন মহামারী নিয়ে বার্তা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকেরই শঙ্কা, ২০২৫ সালে ফের করোনার মতো নতুন কোনো মহামারীর উদ্ভব হতে পারে।
যদিও কোন রোগটি মহামারী আকার ধারণ করবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বার্তা এখনই দেওয়া সম্ভব না।তবে এইচএমভির প্রাদুর্ভাব ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।
যুক্তরাজ্যের সাউথ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র গবেষক ড. মাইকেল হেড বলেন, ‘একটি মহামারীর আশঙ্কা করা হচ্ছে, তবে এখনো কোন রোগটি মহামারী আকার ধারণ করবে, সেটি নিশ্চিত না বলে আগাম মহামারীর নাম দেয়া হয়েছে ডিজিস-এক্স।’
চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, করোনার সময়ে হাসপাতালে যেভাবে ভিড় তৈরি হয়েছিল, একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এইচএমভির প্রাদুর্ভাবেও। একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে জাপানের। দেশটির সংবাদমাধ্যম বলছে, চলতি মৌসুমে দেশটিতে ঠান্ডাজনিত সংক্রমণ ছাড়িয়েছে ৭ লাখেরও বেশি।
হেড বলেন, ‘আগামীর মহামারীর প্রধান বৈশিষ্ট্য হবে মারাত্মক ছোঁয়াচে এবং মানুষের মৃত্যুহার পৌঁছাবে সর্বোচ্চে।
চীনের বর্তমান অবস্থা
চীনে প্রতিনিয়ত এইচএমপিভি প্রকট হয়ে উঠলেও এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা দেশটির সরকার সতর্কতা জারি করেনি। তবে যেভাবে ভাইরাসটি ছড়াচ্ছে, তাতে করে যেকোনো সময়ে দেশটির সরকার জরুরি অবস্থা জারি করতে পারে বলে দাবি বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের।
দেশটিতে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে শিশু এবং বৃদ্ধরা। বিশেষ করে আগে যাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল, তারা এই ভাইরাসের আক্রমণে নাজুক অবস্থায় আছেন।
অনেক সময় রোগের তীব্রতা ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা বা কানে ইনফেকশনের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে সক্ষম বলে অভিমত চিকিৎসকদের।
সতর্ক অবস্থানে ভারত
এইচএমপিভি ভাইরাস চীন থেকে যাতে করোনার মতো ভারতেও ছড়িয়ে না পরে, তাই আগে থেকেই সতর্ক অবস্থানে আছে দেশটি। ভারতের স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক ড. অতুল গয়াল জানিয়েছেন, শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত কোনো সমস্যা এখন থেকে ছোট করে দেখার উপায় নেই। এ ধরনের জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
গয়াল বলেন, ‘আপাতত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রাথমিকভাবে এটিকে সাধারণ ফ্লু ভাইরাস বলেই মনে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত শঙ্কাজনক কোনো বার্তা আমাদের কাছে আসেনি। তবে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নির্দেশ দেওয়া আছে।’
প্রতিরোধ ও প্রতিকার
প্রায় দুই দশক আগে প্রথমবারের মতো এইচএমপিভি ভাইরাস উপস্থিতি জানান দিলেও এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি কোনো টিকা। চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা মোকাবেলায় যেসব সতর্কতা নেয়া হয়েছিল, একই পদক্ষেপে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব।
২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া, অপরিষ্কার হাতে নাক-মুখ স্পর্শ না করা এবং আক্রান্তদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখে এইচএমপিভি থেকে নিরাপদ থাকার পরামর্শ চিকিৎসকদের।
করোনা মহামারীতে বিশ্বে মোট ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪০ কোটিরও বেশি। এ অবস্থায় নতুন এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে জনসাধারণের মনে।