ত্বকের এই ভাঁজ প্রতিরোধ করতে হলে প্রচুর পানি পান, অকারণে কপাল কুচকানো বন্ধ করা, ধূমাপান সম্পূর্ণ ত্যাগ এবং কিছু কিছু কসমেটিক পদ্ধতি অনুসরণ করে ভালো ফল পাওয়া যায়। কসমেটিক পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে মেডিক্যালি অ্যাপরুভড ব্লিচিং এজেন্ট ও কেমিক্যাল পিলিং, ক্ষেত্রবিশেষে লেজার ব্যবহার করা যেতে পারে।
বয়স বাড়লে ত্বকে ভাঁজ পড়ার কারণ হলো- আমাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিক কারণেই চামড়ার ভাঁজ পড়তে শুরু করে। কিছু পরিবেশগত প্রভাব, যেমনÑ সূর্যালোকের সংস্পর্শে এবং ধূমপানের ধোঁয়া এটা আরও বাড়িয়ে দেয়। চামড়া টান টান করে ধরে রাখতে সহায়তা করে কোলাজেন নামক যে প্রোটিন, আমাদের বয়স বাড়তে থাকলে তা ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে। ফলে ত্বক পাতলা ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। চামড়ার যে স্থিতিস্থাপকতা, সেটি আসে ইলাস্টিন থেকে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়তা করে। বয়স বাড়ার প্রতিক্রিয়ার উভয় উপাদান ক্ষয় হয়ে বা পরিমাণে হ্রাস পায়। ফলে ত্বকে দেখা দেয় শুষ্কভাব, গড়ে ওঠে ভাঁজ; যাকে সাধরণভাবে বলিরেখা বলে।
এসব পরিবর্তন অপরিবর্তনীয়। তবে এটা জেনে রাখা ভালো, সূর্যের আলোর প্রতিক্রিয়া, ধূমপানের ধোঁয়া, দূষণ এবং এ ধরনের আরও অনেক কিছু ব্যাপারটা দ্রুততর করে। এসবের প্রতিক্রিয়ায় ত্বকের কোনও কোনও অংশ পুরু হয়ে যেতে পারে বা ঘটতে পারে খারাপ ধরনের কোনও অসুস্থতা বা সমস্যা। তেমন হলে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা, কাঠিন্য নষ্ট হয়ে যায়। ত্বক হয়ে ওঠে খসখসে, অসমান, সৃষ্টি হতে পারে গভীর বলিরেখা।
ত্বক মসৃণ ও বলিরেখামুক্ত রাখার জন্য বিদেশে বিভিন্ন ধরনের ক্রিম, লোশন, ওষুধ ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশেও এসবের কমতি নেই। এসবের মধ্যে এসেছে জিঙ্ক অথবা টাইটেনিয়াম সম্বলিত ক্রিম বা তেল। বয়স ঢেকে রাখার জন্য কত শত ধরনের ক্রিম বা তেল আছে- তার হিসাব করা কঠিন। তবে এগুলোর অধিকাংশ রাসায়নিক বিষ বললে ভুল বলা হবে না। প্রকৃতপক্ষে ত্বকের ভাঁজ পড়া বিলম্বিত করার সহজ উপায় আপনার হাতেই রয়েছে। এজন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন, পুষ্টিকর খাবার বিশেষ করে প্রচুর ফলমূল ও সবজি প্রতিদিন খেতে থাকুন। আপনার জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের এ কৌশলে শরীর রোগমুক্ত রাখতে যেমন সহায়তা করবে, তেমনি তা ত্বক সুস্থ ও সতেজ রাখবে।
লেখক : সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ
গ্রিন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
৩২ গ্রিনরোড, ঢাকা।