ডা. আহসান কবির: সারাবছর কমবেশি ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দিলেও বর্ষাকালজুড়ে এর ব্যাপ্তি লক্ষণীয়।
ডেঙ্গু হলে কী সমস্যা হয়
প্রথম দিকে সাধারণ ফ্লুর মতো এ রোগের লক্ষণ দেখা যাবে। রক্তের পরীক্ষা করলে রোগটি ধরা পড়ে। আমাদের শরীরে রক্তের এক বিশেষ কোষ রয়েছে, যার নাম প্লাটিলেট। এর কাজ শরীরের যে কোনো ক্ষতে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা। ডেঙ্গু জ্বরে ভাইরাস প্লাটিলেট কোষকে ধ্বংস করে স্বাভাবিক মাত্রা সাড়ে ৩ লাখ থেকে কমিয়ে ২০ হাজারে নামিয়ে আনে। তখন শুরু হয় রক্তক্ষরণ ও অন্য সমস্যা। রক্ত জমাট না বাঁধার ফলে ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়েন রোগী। শরীরের প্লাটিলেট কোষের ঘাটতিকে বলে থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া।
ডেঙ্গু রোগে চোখের সমস্যা
এ রোগে চোখের সাদা অংশ, যাকে বলা হয় শ্বেত পটল (স্কলেরা), সেখানে রক্তক্ষরণ হলে চোখ রক্তাভ বা লাল বর্ণ ধারণ করে। আমরা যাকে সাব-কনজেক্টিভাল হেমোরেজ বলি। এ ছাড়া চোখের সামনের কালো অংশ কণীনিকায় (আইরিস) প্রদাহ হয়, যা ইভিআইটিস হয়ে ক্ষেত্রবিশেষে সংক্রমণ ছড়িয়ে জরুরি অবস্থা হতে পারে; যাকে প্যানোফথালমাইটিস বলে। চোখের স্নায়ুস্তরে (রেটিনা) রক্তক্ষরণ, স্পর্শকাতর এলাকা মেকুলাতে পানি জমে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে। রোগী সামনে কালো ছায়া দেখেন। তবে চারপাশে দেখতে পান। এ ছাড়া অপটিক স্নায়ুর (অপটিক নার্ভ) প্রদাহ হলে চোখ ঘোরাতে কষ্টের সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ দৃষ্টিবিভ্রম ঘটতে পারে। চোখের ভেতরের ঘন কাচীয় পানি ভিট্রিয়াস হিউমারের প্রদাহ অমূলক নয়। এ ক্ষেত্রে দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে।
কী করতে হবে
হঠাৎ চোখ ঝাপসা, যন্ত্রণা, খচখচ করা, পানি পড়া বা চোখ ঘোরাতে কষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাথাব্যথা এবং ডেঙ্গু পরীক্ষা পজিটিভ হলে দেরি না করে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
কী খাবেন
প্রচুর পানি, ডাবের পানি, ভিটামিন-সি যুক্ত ফল, কমলা, মাল্টা, পেঁপে, বাতাবিলেবু, পেয়ারা, ডালিম, গাজর, টমেটো, ড্রাগন ফল ইত্যাদি খাবেন।
কী খাবেন না
তেলযুক্ত খাবার, উচ্চ আমিষ খাদ্য, ফাস্টফুড, কোমল পানীয় ইত্যাদি। লেখক : চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ফেকো সার্জন এবং কনসালট্যান্ট যশোর চক্ষু ক্লিনিক ও ফেকো সেন্টার।