অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে। কখনো কখনো ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথি বা স্নায়ুরও ক্ষতি করে। ডায়াবেটিস-সম্পর্কিত নিউরোপ্যাথি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি রোগীদের নিউরোপ্যাথি সম্পর্কে ধারণা নেই। এর সবচেয়ে সাধারণ ধরন হল পেরিফেরাল নার্ভ ড্যামেজ। এক্ষেত্রে হাত ও পায়ে অসাড়তা, ঝি ঝি ধরা বা দুর্বলতার লক্ষণ দেখা দেয়।
নিউরোপ্যাথির আরও গুরুতর ধরন ‘অটোনমিক নিউরোপ্যাথি’ হৃদপিণ্ড, মূত্রাশয়, অন্ত্র ও রক্তনালির দিকে নিয়ে যাওয়া স্নায়ুগুলির ক্ষতি করে। এটি ঘটলে শরীর প্রস্রাবের মতো কাজগুলোও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এমনকি শরীরের ব্যথার অনুভূতিও অনুভব করতে পারে না।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস শুধু নিউরোপ্যাথির ঝুঁকিই বাড়ায় না, হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ায়। যদি নিউরোপ্যাথি হৃদপিণ্ডের দিকে পরিচালিত স্নায়ুগুলোকে নিস্তেজ করে দেয়, তাহলে বুকে ব্যথার মতো হৃদরোগের বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে শরীরে।
ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের কোন কোন লক্ষণ দেখা দেয়?
১. বুকে ব্যথা বা পূর্ণতার অনুভূতি
২. বমি বমি ভাব
৩. গ্যাস্ট্রিক
৪. অস্বাভাবিক ক্লান্তি
৫. চোয়াল, ঘাড় বা বাম হাতে ব্যথা (বিশেষ করে নারীদের)
৬. পরিশ্রম ছাড়াই শ্বাসকষ্ট
৭. হালকা মাথাব্যথা
৮. ঘাম বা আঁটসাঁট হাত
নিউরোপ্যাথি এড়াতে যা করবেন
আপনার ডায়াবেটিস থাকলেও জীবনধারার পরিবর্তনের মাধ্যমে নিউরোপ্যাথি ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারবেন। এজন্য রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা স্বাস্থ্যকর পরিসরে রাখা জরুরি।
এজন্য স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। এছাড়া ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে।
নিউরোপ্যাথিতে ভুগছেন কি না বুঝবেন যেসব লক্ষণে-
১. দাঁড়ালে মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
২. প্রস্রাবে সমস্যা
৩. ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা কম লিবিডোর মতো যৌন সমস্যা
৪. হজমের অসুবিধা যেমন- ক্ষুধা হ্রাস, গিলতে অসুবিধা ও গ্যাস্ট্রিক
৫. খুব বেশি বা খুব কম ঘাম হওয়া
৬. ব্যায়াম করতে সমস্যা ইত্যাদি
এসব উপসর্গ দেখলে দ্রুত ডাক্তার দেখান। প্রাথমিক রোগ নির্ণয় ও চিকিত্সা স্নায়ু ক্ষতি ও মেরামত সমস্যা ধীর করতে সাহায্য করকে।