ডা. আবদুল্লাহ শাহরিয়ার: ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ। বিশ্বে ক্যান্সারে আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা কমানো যায়নি।
ক্যান্সার অনেক সময় নিঃশব্দে হানা দিতে পারে আপনার সুখের জগতে। এরপর শুরু হয় যুদ্ধ। রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, দেশ-বিদেশের অনকোলজিস্ট, প্রচুর টাকা-পয়সা খরচ করে অবশেষে একদিন জেগে ওঠেন একজন ক্যান্সার সারভাইভার অকুতোভয় যোদ্ধা। এমন কিছু ক্যান্সার রয়েছে, যা কিনা আপনাকে ভেবে দেখার সময় দেবে। আর এসব হলো সেকেন্ডারি ক্যান্সার। আশা করি, একটু সচেতন হলেই এসব ক্যান্সারকে আপনি পরাজিত করতে পারবেন।
শৈশবের ক্যান্সার
কোনো কারণে ডাক্তারের নির্দেশমতো বাচ্চার পেটে সিটি স্ক্যান করাতে গিয়ে ধরা পড়ল পেটের নালিতে রয়েছে কিছু পলিপ। এসব পলিপের সবাই না হলেও কেউ কেউ ক্যান্সারের ভবিষ্যৎ বার্তা বহন করে থাকে। সুতরাং এসব জানামাত্রই হেলাফেলা করা যাবে না। বিষয়টি গুরুত্ব দিন সময়মতো। এমনই এক রোগ লিফ্রওমিনি সিনড্রোম। শুরুতে ভদ্রগোছের মনে হলেও সময়ান্তরে রোগটি থেকে দেখা দিতে পারে রক্তের ক্যান্সার লিউকোমিয়া, সারকোমা, ব্রেইন আর স্তনের ক্যান্সার।
পারিবারিক ক্যান্সার
পলিপ অনেক সময় বংশানুক্রমে আপনার শরীরে ঢুকে পড়তে পারে। স্তনের ক্যান্সার এবং মলদ্বারের ক্যান্সারও পারিবারিকভাবে জিনগত প্রভাবে আপনার শরীরে বিস্তার লাভ করতে পারে। এ জন্য শরীরের স্ক্রিনিং করান চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। যদি কোনোভাবে প্রাথমিক স্তরে ক্যান্সারের অস্তিত্ব টের পেয়ে যান, তখন দ্বিধাদ্বন্দ্বে না পড়ে চিকিৎসা শুরু করে দিন গুরুত্বের সঙ্গে।
বার্ধক্য ক্যান্সার উঁকি দেওয়ার সময়
বয়স যতই এগোয়, আপনি কিন্তু ধীরে ধীরে ক্যান্সারের ঝুঁকির দিকে পা বাড়াচ্ছেন। গবেষণা বলছে, সজাগ না হলে বয়সকালে যে কোনো সময় ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। হাড়ের ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, রক্তের ক্যান্সার– এসবের সঙ্গে বার্ধক্যের সম্পর্ক রয়েছে।
জীবন-অভ্যাস
শরীরের খোরাক জোগাতে জাঙ্ক ফুড, তৈলাক্ত খাবার, অসময়ে খাদ্যাভ্যাস– এসব আপনার জন্য ভালো কিছু বহন করে আনতে পারে না।
জেনে নিন ক্যান্সার এড়াতে সুস্থ খাদ্যাভ্যাস
ভিটামিনসমৃদ্ধ সবুজ শাকসবজি বেশি করে খাওয়ার অভ্যাস করুন। টমেটো, শিম, ঢ্যাঁড়শ, পেঁপে, গাজর, ব্রকলি রাখুন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়।
প্রতিদিন ৩০ মিনিট অথবা সপ্তাহে পাঁচ দিন ব্যায়াম করুন নিবিষ্ট মনে।
স্থূলতা নয়, বিএমআই (ওজন/উচ্চতা) বয়স অনুযায়ী ঠিক রাখুন।
ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। পরোক্ষ ধূমপান থেকেও নিজেকে রক্ষা করুন।
মদপান করা থেকে বিরত থাকুন।
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি যেন আপনার ত্বকসহ শরীরের কোনো ক্ষতি না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
লেখক : বিভাগীয় প্রধান, শিশু কার্ডিওলজি বিভাগ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল