জান্নাতুন নূর নাঈমা: যারা কেমোথেরাপি নিচ্ছেন, তাদের সাধারণত ওজন ও শরীরের হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার প্রবণতা থাকে কিংবা পেট খারাপ হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া তাদের মুখের ভেতর ঘা, মিওকোসাইটিস, ড্রাই মাউথ, গিলতে সমস্যা, রুচি কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সে ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের খাবার-দাবারগুলো হবে সহজে হজমযোগ্য। প্রয়োজনে শক্ত খাবার এড়িয়ে তারা নরম খাবার খাবেন। তারা একসঙ্গে অনেক বেশি খাবার খেতে না পারলে তাদের অবশ্যই সারাদিন অল্প অল্প করে খাবার গ্রহণ করার চেষ্টা করতে হবে এবং খাবারের তালিকায় অবশ্যই চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনস, মিনারেলস কোনোটা যেন মিস না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে তারা লাল আটার রুটি রাখতে পারেন কিংবা লাল চালের ভাত রাখতে পারেন। প্রোটিনের জন্য মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, দই, ডাল যেন মিস না হয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে সারাদিন দুই থেকে তিনটি ডিম খেতে হতে পারে। অবশ্যই খাবারের তালিকায় ফল রাখতে হবে।
এখন যেহেতু শীতকাল, তাদের যেন ডিহাইড্রেশন না হয়ে যায়, সে জন্য প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে। পানি, স্যুপ বা জুস গ্রহণ করতে হবে। এ সময় অনেকের ইমিউনিটি কমে যায়। তাই সারাদিনের খাবার অবশ্যই ওয়েল প্ল্যানড এবং ওয়েল ব্যালান্সড হতে হবে।
খাবার অবশ্যই হাইজিন মেইনটেন করতে হবে। রান্না করা খাবার দুই ঘণ্টার মধ্যেই ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে এবং বারবার গরম করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তারা অবশ্যই বাসি খাবার খাবেন না। কোনো জিনিস ধোয়ার জন্য তারা অবশ্যই ফুটন্ত পানি ব্যবহার করবেন এবং দিনে পাঁচ থেকে ছয়বার বা সাত থেকে আটবার একটু একটু করে তাদের খাবার গ্রহণ করতে হবে শারীরিক কন্ডিশন অনুযায়ী।
তাদের অবশ্যই প্রসেসড ফুড, লবণাক্ত খাবার, চিনিযুক্ত খাবার, ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার, বাইরের কেনা খাবার, রাস্তার কেনা খাবার, আধা সেদ্ধ কোনো খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
তবে রোগীর ব্লাড প্যারামিটারের ওপর নির্ভর করে যে কোনো খাবারের তালিকা পরিবর্তন হতে পারে। সেটি অবশ্যই ব্যক্তিবিশেষে ভিন্ন হবে।
লেখক : পুষ্টিবিদ, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা