আজ ২ আগস্ট মঙ্গলবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘জরায়ু মুখের ক্যান্সার মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য একটি প্রচেষ্টা’ শীর্ষক এক সেমিনার এবং ইনসেপ্টার নতুন ভ্যাকসিন প্যাপিলোভ্যাক্স-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে দেশের এইচপিভি ভ্যাকসিনের (হিউম্যান পাপিললোমাভাইরাস) প্রয়োজনীয়তা এবং ক্যান্সার নির্মূলে নিয়মিত স্ক্রিনিং ও এইচপিভি ভ্যাকসিন (হিউম্যান পাপিললোমাভাইরাস) প্যাপিলোভ্যাক্সের সূচনা হলে কীভাবে এটি জরায়ু মুখের ক্যান্সার মুক্ত দেশ অর্জনে অবদান রাখতে পারে এ নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া কয়েক বছর ধরে দেশে এইচপিভি ভ্যাকসিনের যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা প্যাপিলোভ্যাক্স কীভাবে পূরণ করতে পারবে এ বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। একই সাথে এই ভ্যাকসিনের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগগুলোও সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়। সেমিনারটি আয়োজন করে ওজিএসবি ((অবসটেট্রিকাল এন্ড গাইনোক্লোজিক্যাল সোসাইটি অফ বাংলাদেশ)। সার্বিক আয়োজনে সহযোগিতা করেছে ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লি.।
সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. টিএ চৌধুরী এবং জাতীয় অধ্যাপক শাহলা খাতুন প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য প্রদান করেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ওজিএসবি (অবসটেট্রিকাল এন্ড গাইনোক্লোজিক্যাল সোসাইটি অফ বাংলাদেশ)-এর সভাপতি প্রফেসর ড. ফেরদৌসী বেগম। অধ্যাপক ডাঃ গুলশান আরার স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সেমিনার শুরু হয়। সেমিনারে বিষয়ের উপর উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইন অনকোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাক্তার সাবেরা খাতুন এবং ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস এর ম্যানেজার (এমএসডি) ফরহানা লাইজু। চমৎকার প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন ওজিএসবি-এর সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি প্রফেসর শেখ জিন্নাত আরা নাসরিন।
সেমিনারে ইনসেপ্টার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ নির্বাহী পরিচালক ডা. ই এইচ আরেফিন আহমেদ। সবশেষে ইনসেপ্টার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্যাপিলোভ্যাক্স-্র মোড়ক উন্মোচন মধ্যে দিয়ে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এখন প্যাপিলোভ্যাক্স নামে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এইচপিভি ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে। জরায়ুমুখ ক্যান্সার বাংলাদেশে মহিলাদের মধ্যে দ্বিতীয় এবং বিশ্বব্যাপী চতুর্থ সর্বাধিক সাধারণ ক্যান্সার। বাংলাদেশে ক্যান্সারে নারী মৃত্যুর মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় প্রধান কারণ। এই ক্যান্সারে মৃত্যুর প্রধান কারণ অসচেতনতা এবং অনেক বছরের অবহেলা। প্রতি বছর দেশে ১০ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে মারা যায় এবং ৫ কোটিরও বেশি নারী এর ঝুঁকিতে আছে।
৯ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত সকল সুস্থ নারীকে এই ভ্যাকসিন দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ জরায়ুমুখের ক্যান্সার নির্মূলের পথ অনেকটা এগিয়ে যাবে।
জরায়ু মুখের ক্যান্সার নির্মূল করার জন্য, এইচপিভি ভ্যাকসিন প্রাথমিক পদক্ষেপ। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে এই ভ্যাকসিনের এক বিশাল শূন্যতা ছিল। এই শূন্যতা পূরণে এগিয়ে এসেছে দেশের প্রথম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিঃ এবং দেশে প্রথমবারের মতো জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ভ্যাকসিন, প্যাপিলোভ্যাক্স বাজারজাত শুরু করেছে। এটি দেশের জন্য একটি গর্বের, যা দেশ থেকে জরায়ু মুখের ক্যান্সার নির্মূল করার পথ প্রশস্ত করবে।