ডা. সৈয়দা নাফিসা ইসলাম: আবহাওয়া পরিবর্তন বিশেষ করে শীতকালে শিশুদের শ্বাসকষ্ট একটি মারাত্মক সমস্যা। তাই বেশি শীতে অভিভাবকদের একটু বাড়তি দৃষ্টি দিতে হয় শিশুদের ওপর ।
শ্বাসকষ্টের কারণসমূহ
শিশুর অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, শ্বাসযন্ত্রের উপরের দিকে ইনফেকশন,শ্বাসযন্ত্রের রাস্তা বন্ধ হওয়া। যক্ষ্মায় যে সমস্যা হয় তাহলো হার্টে সমস্যা, মাথায় সমস্যা, রক্তে ইনফেকশন ইত্যাদি।
শ্বাস কষ্টের গুরুত্বপূর্ণ সতর্ক চিহ্ন
নাক ফুলে যায়, বুকের খাচা ভেতরে ডুকে যায়, বুক ও পেটের মাঝের অংশ বসে যায়, দ্রুত শ্বাস নেয়া ও লম্বা বাক্য বলতে পারে না, এমনকি কথা বলতেও কষ্ট হয়, শুয়ে থাকতেও কষ্ট হয়। মনে রাখতে হবে শ্বাসকষ্ট হলো রোগের একটি মারাত্মক পর্যায়, সেটা যে রোগই হোক না কেন। তাই শিশুর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে মনে হলে যত দ্রুত সম্ভব শিশুকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখান।
শিশুর শ্বাসকষ্টের উপসর্গসমূহ
এক্ষেত্রে শিশুর সাধারণত জ্বর থাকে। রুচি কমে যায়, দেখতে অসুস্থ মনে হয়। তাছাড়া যে স্থানে ইনফেকশন অর্থাৎ ফুসফুসে হলে কাশি থাকবে, গলায় হলে ব্যথা করবে, মুখে হলে খেতে কষ্ট হবে। তাই শিশুর সমস্যা বেশি না কম তা জরুরি নয়। জরুরি হলো শ্বাসকষ্টের চিহ্ন এবং এটা থাকলে শিশুকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে দেরি করা যাবে না।
অ্যাজমা
অ্যাজমা হলো দীর্ঘমেয়াদি রোগ।
শিশুদের ক্ষেত্রে বিবিধ কারণে এই রোগ নির্ণয় করা বেশ জটিল। বিশেষ করে ১ বছর বা কমবয়সী বেশির ভাগ অ্যাজমা রোগী সর্দি-কাশি বা নিউমোনিয়া বলে চিকিৎসা পায়। তবে মনে রাখা দরকার যেহেতু শিশুদের অ্যাজমা নির্ণয় করার নির্দিষ্ট উপায় নেই, তাই অভিভাবকদের সন্দেহ হলে রোগাক্রান্ত শিশুকে শিশু বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে।
অ্যাজমার কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকে যেমন- বারবার হওয়া, নির্দিষ্ট কোনো কারণে বেড়ে যাওয়া, নিকটাত্মীয় বিশেষ করে বাবা, মা, ভাইবোনদের থাকলে বেশি হবার সম্ভাবনা, ওষুধ না খাওয়ার কারণে বেড়ে যাওয়া, হঠাৎ শুরু হওয়া, জ্বর ছাড়া সুস্থ বাবুর শ্বাসকষ্ট হওয়া, রাতে কাশি বেড়ে যাওয়া। শ্বাসকষ্ট ছাড়াও অন্য যেসব অসুখের কারণে শিশুর শ্বাস কষ্ট হয় , সেখানে ঐ নির্দিষ্ট অসুখের লক্ষণ বেশিরভাগ প্রকাশ পায়।
পরীক্ষা
বুকের এক্সরে অপরিহার্য, সেই সঙ্গে রোগীর অবস্থা বিবেচনা করে অন্যান্য পরীক্ষা করা হয়।
চিকিৎসা
শিশুর অবস্থার ওপর নির্ভর করে। এমনকি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করে অক্সিজেন দেয়া লাগতে পারে। আবার অপারগ হলে শিরায় স্যালাইন দিতে হয়। জ্বর থাকলে প্যাারাসিটামল খাওয়ানো, আবার বুকে পানি জমলে তা বের করা ইত্যাদি। সুতরাং শ্বাসকষ্টের মতো মারাত্মক সমস্যা অবহেলা করবেন না।
শিশুর যক্ষা
‘শিশুর যক্ষা’ এটি নির্ণয় করা খুবই কঠিন। সাধারণত দীর্ঘমেযাদি কাশি, হালকা জ্বর ও ওজন কমে গেলে শিশুকে নিয়ে অভিভাবকরা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। বিভিন্ন পরীক্ষা আছে কিন্তু এমনও হতে পারে যে, এইসব কোনো পরীক্ষাতেই রোগ ধরা পড়লো না, তাই এই ধরনের সমস্যায় শিশু ভুগে থাকলে অবশ্যই শিশু বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে।
লেখক: কনসালট্যান্ট, শিশু বিভাগ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
চেম্বার: (১) ডা. নাফিসা’স চাইল্ড কেয়ার শাহ্ মখদুম, রাজশাহী।
(২) আমানা হাসপাতাল, ঝাউতলী মোড়, লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী।