English

22 C
Dhaka
শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
- Advertisement -

মস্তিষ্কের বার্ধক্য প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

- Advertisements -

এজিং আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছেই। মস্তিষ্কে বার্ধক্য চলে আসার নামই হলো ব্রেইন এজিং। এ রোগে ব্রেইন ক্রমে শুকিয়ে কোষগুলো অকার্যকর হতে থাকে এবং ব্রেইনের আয়তন কমে যায়। কোষের আয়তন কমতে থাকলে মানুষের স্মৃতিশক্তি, বুদ্ধি ও দক্ষতার ওপর প্রভাব পড়ে।

রোগের কারণ : মস্তিষ্ক যদি কাজ না করে অলস অবস্থায় থাকে, তাহলে দ্রুতগতিতে ব্রেইন এজিংয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ব্রেইন যদি সক্রিয় থাকলে এজিংয়ের প্রক্রিয়া ধীরগতিতে হয়। যারা অনেক পড়াশোনা করেছেন বা পেশার কারণে পড়াশোনা বা ফিল্ড ওয়ার্কের কাজে যুক্ত রয়েছেন, তাদের এজিং প্রসেস দেরিতে শুরু হয়। বংশগত কারণেও ব্রেইন এজিং হতে পারে। পরিবারে যদি নিকটাত্মীয়ের মধ্যে অল্প বয়সে মস্তিষ্কে বার্ধক্য আসার প্রবণতা থাকে, তা হলে পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে এটি সংক্রমিত হতে পারে। আবার মস্তিষ্কে রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়া ও হরমোনাল কারণেও এজিং প্রসেস প্রভাবিত হয়।

লক্ষণ : ব্রেইন এজিংয়ের অন্যতম প্রধান লক্ষণ স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া। প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে কোনো ঘটনা, জিনিস বা কারও নাম, ঠিক সময়ে ঠিক শব্দ সহজে মনে পড়তে চায় না। এতে বুঝতে হবে, মস্তিষ্কের যে জায়গায় শব্দগুলোর ভাণ্ডার, সেখান থেকে ঠিক সময়ে তা বেরিয়ে আসছে না। এরপর দেখা যায়, ছোটখাটো কাজ করতে নানা সমস্যা। পরবর্তী পর্যায়ে খুব সাধারণ কাজ, যেমন- কোনো একটা জিনিস বিছানা থেকে টেবিলে সরিয়ে রাখতেও অসুবিধা হতে পারে। এ ধরনের কাজ সহজ মনে হলেও চোখ, হাত, মাথার কো-অর্ডিনেশনের প্রয়োজন। অর্থাৎ এক্ষেত্রে চোখে দেখে বিষয়টা বুঝে হাত দিয়ে জিনিসটা সরিয়ে রাখতে হয়। ব্রেইনের কোষগুলো শুকিয়ে যেতে থাকলে এগুলো করতেও বেশ অসুবিধা হয়। বয়স্কদের মধ্যে প্রায়ই দেখা যায়, জায়গার জিনিস জায়গায় রাখতে পারছেন না। বই বা চাবি যেখানে থাকে, সেখানে না রেখে অন্য কোথাও রাখছেন। একই সঙ্গে কমে আসে বিচারিক ক্ষমতা।

কখন কী করা উচিত, সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেন না। এর হাত ধরে আসে ডিপ্রেশন। সবার সঙ্গে মেলামেশা বা কর্মক্ষেত্রে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। ব্রেইনের ক্ষয় যত বাড়তে থাকে, এই লক্ষণগুলো তত প্রকট হতে শুরু করে। মস্তিষ্কের মনে রাখার অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লক্ষণগুলো দুভাবে দেখা দেয়- কিছু কিছু অসুখ রয়েছে, যাতে সাময়িকভাবে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেতে পারে। যেমন- মাথায় টিউমার, স্ট্রোক, থাইরয়েড, এনকেফেলাইটিস ইনফেকশন ইত্যাদি অসুখে সাময়িকভাবে স্মৃতি লোপ পেতে পারে। এ ক্ষেত্রে রোগীর মধ্যে ভুলে যাওয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। এ ছাড়া ভিটামিনের অভাব থেকেও সাময়িক স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। মানসিক সমস্যা, অত্যধিক স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি, হতাশা থেকেও ভুলে যাওয়া, বিচার করার ক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। অসুখের কারণে স্মৃতিলোপ হলে চিকিৎসায় স্মৃতিশক্তি আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। অসুখের কারণে স্মৃতিলোপ না হলে ভুলে যাওয়ার লক্ষণগুলো ব্রেইন এজিং বা ব্রেইন ডিজেনারেশন বলে ধরতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্মৃতিশক্তি স্থায়ীভাবে লোপ পায়।

চিকিৎসা : ব্রেইন এজিংয়ের কোনো চিকিৎসা নেই। তবে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে এজিং প্রসেসের গতি কমিয়ে দেওয়া সম্ভব। এজন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের মস্তিষ্ক খাদ্যের ওপর নির্ভরশীল। ভিটামিন বি-১২, ভিটামিন-এ, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেলে মস্তিষ্ক সুস্থ থাকে। সেক্ষেত্রে দুটো জিনিস মেনে চলতে হবে। এর একটি হলো চিনি এড়িয়ে চলা এবং লো কার্বোহাইড্রেট ডায়েটে থাকা। কাজের মাধ্যমে মস্তিষ্ক সচল রাখা এবং নিয়মিত নিউরোবিশেষজ্ঞের পরামর্শে থাকা।

লেখক : অধ্যাপক, নিউরোসার্জারি বিভাগ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

চেম্বার : ল্যাবএইড, ধানমন্ডি, ঢাকা

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন