English

25 C
Dhaka
রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
- Advertisement -

ভারত সরকারের উপহার: ঢাকায় পৌঁছেছে করোনাভাইরাসের ২০ লাখ ডোজ টিকা

- Advertisements -

ঢাকায় পৌঁছেছে করোনাভাইরাসের ২০ লাখ ডোজ টিকা। আজ বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১৬৭টি বক্সে ভারত সরকারের উপহারের এসব টিকা পৌঁছয়।

দুপুরের পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের পক্ষ থেকে তা হস্তান্তর করা হবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে।

গতকাল বুধবার দুপুর ২টার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং বিষয়ক এক অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বৃহস্পতিবার ভারত থেকে ৩৫ লাখ ডোজ টিকা আসবে, যার মধ্যে উপহার ছাড়াও থাকছে চুক্তির প্রথম চালান হিসেবে ১৫ লাখ ডোজ। তবে সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংশোধনীতে চুক্তির টিকা আসার বিষয়টি বাদ রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে গণমাধ্যমের কাছে। অর্থাৎ আজ পৌঁছল উপহারের ২০ লাখ ডোজই।

উপহারের এই টিকা আসার পর বিভিন্ন পর্যায়ের ২০-২৫ জনকে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে। এরপর হবে মহড়া। এর ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সময়ে সারা দেশে টিকা দেওয়া হবে। অবশ্য এসব প্রক্রিয়া কবে থেকে শুরু করা হবে তা জানানো হয়নি। এ ছাড়া অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে দেশের প্রায় আট কোটি মানুষ টিকা নিতে পারবে না।

এছাড়া ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ কিনছে বাংলাদেশ। সেই টিকার প্রথম চালান ২৫-২৬ জানুয়ারি আসার কথা।

গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে স্বাস্থ্য খাতের সাংবাদিকদের নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে টিকাসংক্রান্ত নানা তথ্য জানানো হয়। এতে করোনা মহামারি মোকাবেলায় গঠিত সরকারের জাতীয় সমন্বয় কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজের নেতৃত্বে অংশ নেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম।

স্বাস্থ্যসচিব জানান, ১৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় গঠিত সরকারের জাতীয় কমিটির একটি বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিতরণসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয়। সে অনুসারে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় ভারত থেকে ভারতীয় বিশেষ বিমানে ভারত সরকারের উপহারের যে টিকা আসবে তা গ্রহণ করবেন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের অন্য কর্মকর্তারাও থাকবেন। থাকবেন ভারতীয় হাইকমিশনারও। পরে ওই টিকা নিয়ে রাখা হবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন স্টোরে। এরই মধ্যে সেই স্টোর প্রস্তুত হয়েছে।

আব্দুল মান্নান জানান, দেশে টিকা আসার পর প্রথমে কুর্মিটোলা বা কোনো একটি হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, পুলিশ, সেনাবাহিনী, প্রশাসন, সাংবাদিকদের একজন করে প্রতিনিধিকে টিকা দেওয়া হবে। তাঁদের ২০-২৫ জনের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে টিকা প্রয়োগ করে দেশে করোনার টিকাদান কর্মসূচি ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তী সময়ে ৪০০ থেকে ৫০০ স্বাস্থ্যকর্মীকে নিয়ে ঢাকার চারটি হাসপাতালে ড্রাই রান বা মহড়া দেওয়া হবে। এই হাসপাতালগুলো হচ্ছে—ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এরপর এক সপ্তাহ তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কি না। ফলাফল দেখে পরবর্তী সময়ে সারা দেশে টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হবে। তিনি জানান, যে মাসে শুরু হবে সে মাসে টিকা পাবে ৬০ লাখ মানুষ, দ্বিতীয় মাসে ৫০ লাখ, তৃতীয় মাসে আবার ৬০ লাখ।

সচিব বলেন, ‘আশা করছি পূর্বনির্ধারিত সময় অনুসারে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সারা দেশে টিকা দেওয়ার কাজ শুরু করা যাবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘করোনার টিকা আমরা ইপিআইর (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) মতো মাঠে-ঘাটে কেন্দ্র করে দিব না। এই টিকা দেওয়া হবে হাসপাতালে। যাতে করে কোনো সমস্যা হলে তাত্ক্ষণিক তা ম্যানেজ করা সহজ হয়।’

আব্দুল মান্নান জানান, টিকা দেওয়ার জন্য আইসিটি বিভাগ এরই মধ্যে একটি অ্যাপ তৈরির কাজ প্রায় শেষ করেছে। এ ছাড়া টিকা গ্রহণকারীদের জন্য ১৬২৬৩ নম্বরের একটি হটলাইনের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সার্ভিস রাখা হচ্ছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আপাতত সরকারিভাবেই টিকা দেওয়া হবে। বেসরকারি পর্যায়ে টিকা আনার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। কেউ টিকা আনলেও তা সরকারি নিয়ন্ত্রণে একই অ্যাপ ব্যবহার করে দিতে হবে।

কারা টিকা পাবে না জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, প্রথমত বিভিন্ন জটিল রোগের কারণে যাঁদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে গেছে, যাঁরা ক্যান্সারের রোগী কিংবা উচ্চমাত্রায় স্টেরয়েড নিচ্ছেন, যারা ১৮ বছর বয়সের নিচে, যাঁরা গর্ভবতী এবং যাঁরা দেশের বাইরে আছেন তাঁরা টিকা পাবেন না।

আইসিটির সিনিয়র সচিব বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহায়তায় করোনার টিকা প্রয়োগের জন্য ‘সুরক্ষা’ নামের একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এখন সেটির পরীক্ষা চলছে। ২৩ জানুয়ারি এটার কাজ শেষ হবে এবং ২৫ জানুয়ারি তা চালুর জন্য প্রস্তুত থাকবে।

এ সময় আইসিটি বিভাগের অ্যাপ প্রস্তুতকারী দলের সদস্যরা কিভাবে অ্যাপটি কাজ করবে সেটা এক উপস্থাপনার মাধ্যমে দেখিয়ে দেন। এ ছাড়া ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, টিকার খবরাখবর জানানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একটি মিডিয়া সেল চালু করা হয়েছে। প্রতিদিন সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে হালনাগাদ তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন