English

28 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

ব্যথা প্রতিরোধে ভিটামিন ডি

- Advertisements -

একজন মানুষের শারীরিক সুস্থতা ও সুস্থ জীবনযাপনের জন্য ভিটামিন ডি-এর প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। এর অভাবে শরীরে নানা অসুবিধা হতে পারে। তার মধ্যে ঘন ঘন রোগ হওয়া, সংক্রমণ, অবসাদ, হাড় ও কোমর ব্যথা ইত্যাদি রোগ হতে পারে। এমনকি মহামারি করোনা থেকে বাঁচতেও এর গুরুত্বের কথা উঠে এসেছে।

কেন প্রয়োজন

ভিটামিন ডি শরীরে পর্যাপ্ত না থাকলে ঘন ঘন সর্দি-কাশি হতে পারে। দেখা যায় যদি কারো ভিটামিন ডির অভাব থাকে তাহলে শ্বাসতন্ত্রে ঘন ঘন সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি ঘন ঘন সংক্রমণ ছাড়াও নানা রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে ভিটামিন ‘ডি’ এর সঙ্গে কম বয়সীদের অবসাদগ্রস্ত হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। যাদের রক্তে ভিটামিন ডি অপর্যাপ্ত থাকে তারা একটুতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে।

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ‘ডি’ এর অভাবে হাড়ে ও কোমরে ব্যথা হয়ে থাকে। বিশেষ করে বয়স্ক নারীদের। ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতা অনেকের ক্ষেত্রেই ভিটামিন ‘ডি’ এর ঘাটতির একটি লক্ষণ। দেখা গেছে, যারা বিষণ্নতায় ভুগছে, তাদের রক্তে ভিটামিন ডি যথাসম্ভব প্রদান করতে পারলে বিষণ্নতা অনেক কমে যায়। আবার যেকোনো আঘাত বা অপারেশন হলে যদি রক্তে ভিটামিন ডির ঘাটতি থাকে, তবে তা সহজে ভালো হতে চায় না। কেননা, ভিটামিন ডির যথেষ্ট ভূমিকা থাকে ইনফেকশনের বিরুদ্ধে কাজ করে ক্ষতস্থান দ্রুত সারিয়ে তুলতে। ভিটামিন ডি রক্তের ক্যালসিয়াম শোষণ ও হাড়ের বিপাকের জন্য জরুরি একটি পুষ্টি উপাদান। মেনোপোজের পর বেশির ভাগ নারীর হাড় ক্ষয় হয়ে যায়। এর মধ্যে বেশির ভাগই ভিটামিন ডির অভাবের কারণে। হাড়ের ক্ষয় মূলত ভিটামিন ডির অভাবের জন্য হয়ে থাকে। চুল অনেক কারণে পড়তে পারে। কিন্তু চুল পড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে ভিটামিন ‘ডি’কে দায়ী করা হয়ে থাকে। ভিটামিন ডির অভাবে শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক যেকোনো বয়সীদেরই মাংসপেশিতে ব্যথা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক শিশু আছে যাদের ভিটামিন ডির ঘাটতি থাকে। তাদের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়। 

ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি বোঝার উপায়

ভিটামিন ডি’র অভাবের কারণে অনেক রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরে এটি কম থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে সংক্রমণের অনেক বেড়ে যায়। এটির অভাব আমাদের পেশিশক্তি কমানোর জন্য দায়ী। ফলে পেশিতে টান ধরতে দেখা যায়। এ ছাড়াও নানা সমস্যা হতে দেখা যায় শরীরে। তাই এ রকম সমস্যা হচ্ছে মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার। ভিটামিন ডি পাওয়ার প্রাকৃতিক সোর্স বা উৎস হচ্ছে রোদ বা সূর্যের আলো। তাই এ ভিটামিনটির ঘাটতি রোধের অন্যতম উপায় হচ্ছে রোদে থাকা।

ভিটামিন ডি-এর গবেষণা ব্যথা: যেমন পায়ের গিটে ব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, দুর্ঘটনা পরবর্তী অপূরণীয় নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক ব্যথা, মাথা ধরা, মেরুদণ্ডে ব্যথা, শক্ত মাংসপেশিতে অসহনীয় অনির্দিষ্ট সময়ব্যাপী ব্যথাসহ সব ধরনের মানবদেহের ব্যথার মূল রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন এসব ব্যথার কারণ হলো- আনুপাতিক হারে ভিটামিন ডি-এর অভাব। ভিটামিন ডি-এর একটি কার্যকরী উৎস প্রয়োগের অভিজ্ঞতা ইউএস জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই অভিজ্ঞতায় দেখা যায় কোষের অপরিপক্বতার রোগে আক্রান্ত ১৬ বছরের একটি মেয়েকে তার অসহনীয় মাত্রার শরীর ব্যথা এবং মাথাব্যথা কমাতে চিকিৎসকরা পরীক্ষামূলকভাবে ৫০,০০০ আইইউ মাত্রার ভিটামিন ডি’র সঙ্গে ১০০০ মিগ্রা ক্যালসিয়াম কার্বনেট প্রতি দু সপ্তাহে সেবন করার পর ১৪তম সপ্তাহে আশ্চর্যজনকভাবে এই ব্যথা দ্রুততায় কমতে থাকে। আরও দেখা যায় একজন বৃদ্ধার শরীরের অসহনীয় মাংসপেশির ব্যথা কমাতে ৫০,০০০ মাত্রার ভিটামিন ডি সংশ্লিষ্ট যৌগ রোগীর দেহে ৮ সপ্তাহ দেয়ার পর রোগী ব্যথামুক্ত হয়ে যান। এছাড়া আরও দেখা যায়, টেনশন বা স্ট্রেসের কারণে অতিমাত্রায় মাথাব্যথায় কাতর ৮ জন রোগীর দেহে প্রতিদিন ১০০০ থেকে ১৫০০ মাত্রার ডি-৩ এবং ১০০০ মাত্রার ক্যালসিয়াম ওষুধ সেবন করে কারো কারো ক্ষেত্রে ৪ সপ্তাহে আবার কারো কারো ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৮ সপ্তাহে তা লাঘব হতে দেখা গেছে।  মনে রাখতে হবে, কারো কাছ থেকে শুনে মুড়ি-মুড়কির মতো ভিটামিন ডি মোটেও খাওয়া উচিত নয়। শরীর দুর্বল লাগলে, শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে সমস্যা দেখা দিলে কেবল ডাক্তারই বলে দিতে পারবেন একজন ব্যক্তির কি পরিমাণ ভিটামিন ডি খেতে হবে। অন্যথায় অতিরিক্ত সেবনে ক্ষতিও হতে পারে।

লেখক: জনস্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক, খাজা বদরুদজোদা মডার্ন হাসপাতাল, সফিপুর, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন