ডা. রাহেলা খাতুন: জুন মাসজুড়ে বিশ্বব্যাপী পালিত হলো ‘জরায়ু ক্যান্সার সচেতনতা মাস’। উন্নত বিশ্বে স্ত্রী জননাঙ্গের ক্যান্সারের মধ্যে জরায়ুর ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক। বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে এ ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিকভাবে ২০২৩ সাল থেকে জুন মাসকে ‘জরায়ু ক্যান্সার সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
জরায়ুমুখ বা সারভাইক্যাল ক্যান্সারের মতো এ রোগের কোনো প্রতিরোধক টিকা নেই। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্তকরণ এবং সঠিক চিকিৎসকের কাছে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণই এ রোগ প্রতিহত করার একমাত্র উপায়।
কাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি?
সাধারণত অধিক বয়স্ক নারীদের, বিশেষত মেনোপজের পর এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এ ছাড়া স্থূলকায়, ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশনের রোগী, যাদের বাচ্চা নেই বা বাচ্চার সংখ্যা কম, যারা হরমোনথেরাপি নিচ্ছেন এবং যাদের পরিবারে জরায়ু ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সারের রোগী আছে (জেনেটিক মিউটেশনের কারণে), তাদেরও ঝুঁকি বেশি।
লক্ষণ
মাসিকের রাস্তা দিয়ে অস্বাভাবিক রক্তপাত;
মেনোপজের পর রক্তস্রাব;
অনিয়মিত মাসিক;
নারীর ৪৫ বছর বয়সের পর মাসিকের সময় বেশি রক্তপাত হওয়া ইত্যাদি।
রোগ শনাক্তকরণ
উপরোল্লিখিত লক্ষণগুলোর কোনো একটি দেখা দিলে একজন গাইনি ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসক এ ক্ষেত্রে সাধারণত রোগীকে পরীক্ষা করে দেখে প্রয়োজনে বায়োপসি পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ শনাক্ত করে থাকেন। ক্যান্সার ধরা পড়লে সেটা কতদূর ছড়িয়েছে, তা বোঝার জন্য আরও কিছু অ্যাডভান্সড টেস্ট করতে হয়।
চিকিৎসা
সার্জারি বা অপারেশনই হচ্ছে প্রাথমিক
পর্যায়ের মূল চিকিৎসা। এ ছাড়া কোনো কোনো রোগীর রেডিওথেরাপি ও কেমোথেরাপিও লাগতে পারে।
শেষ কথা
প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের মতো আয়ু লাভ করতে পারে। সচেতনতার মাধ্যমেই সম্ভব সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ।
লেখক : গাইনি ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা ও কনসালট্যান্ট আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০।