English

25 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

চিকেনপক্স জটিলতায় শিশুর নিউমোনিয়া হতে পারে

- Advertisements -
অধ্যাপক ডা. ইমনুল ইসলাম: চিকেনপক্স বা জলবসন্ত ছোঁয়াচে রোগ। যে কোনো বয়সী যে কারও হতে পারে। তবে নবজাতক, ক্ষেত্রবিশেষে প্রাপ্তবয়স্করা আক্রান্ত হলে রোগটির তীব্রতায় মৃত্যু আশঙ্কা থাকে। জলবসন্ত সাধারণত ঝুঁকিপূর্ণ নয়। এমনি ভালো হয়। তবে ভ্যারিসেলা জস্টার নামক জীবাণু রোগীর দেহে সুপ্ত অবস্থায় থেকে যায়। পুনরায় সক্রিয় হয়ে হারপিস জাস্টার রোগের সৃষ্টি করে।

যেভাবে ছড়ায় : আক্রান্ত শিশুর সরাসরি সংস্পর্শে এলে, আক্রান্ত শিশুর থুথু-হাঁচি ও কাশি, আক্রান্ত শিশুর ব্যবহৃত সামগ্রীর মাধ্যমে ছড়ায়। গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসের মধ্যে মা আক্রান্ত হলে গর্ভজাত শিশু আক্রান্ত হতে পারে। সন্তান প্রসবের এক সপ্তাহ আগে-পরে মা আক্রান্ত হলে নবজাতকের চিকেনপক্স হতে পারে। রোগটি ১৪-২১ দিন সুপ্তাবস্থায় থাকতে পারে।

চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র : কুসুম গরম তরল খাবারসহ স্বাভাবিক যে কোনো খাবার অল্প করে বারবার খেতে হবে। ব্যথা বেশি হলে প্যারাসিটামল জাতীয় সিরাপ দেওয়া যেতে পারে। চুলকানি হলে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ অথবা ক্যালামাইন লোশন শরীরে ব্যবহার করতে হবে। মুখগহ্বর সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। ব্যাকটেরিয়াজনিত ত্বকের সংক্রমণে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিতে হবে। রোগের তীব্রতায় (চামড়ায় প্রদাহ বেড়ে গেলে, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে) অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।

লক্ষণ : সাধারণত ২-৮ বছরের শিশুর বেশি হতে দেখা যায়। রোগটির সুপ্তকাল অতিক্রম করে প্রথম দিকে জ্বর ১০০-১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত ওঠে। ক্লান্ত লাগা, মাথাব্যথা, অরুচি, বমিভাব হতে পারে। এক বছরের কম বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে প্রাথমিক এ লক্ষণগুলো দেখা যায় না। প্রথম দিনেই চামড়ায় র‌্যাশ অথবা লালচে দাগ দেখা যেতে পারে। দানাগুলো প্রথম দিকে লালচে, পরে উঁচু হয়ে পানিপূর্ণ হয়ে ৩-৪ দিন থাকে। পরে ঘোলাটে হয়। শেষে দানাগুলো শুকিয়ে আলগা আবরণটি খসে পড়তে দেখা যায়। চামড়ার এ সংক্রমণ মাথা ও মুখমণ্ডল থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন স্থান, যেমন—বুক, পেট, হাত, পা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। একদিকে প্রথম দিকের দানাগুলো শুকাতে শুরু করলেও নতুন নতুন দানা শরীরের বিভিন্ন স্থানে উঠতে দেখা যায়। গড়পরতা এ দানাগুলোর সংখ্যা ২০০-৩০০ পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষ ক্ষেত্রে দানাগুলোর সংখ্যা ১০ থেকে ১ হাজার ৫০০ পর্যন্ত হয়ে থাকে। দানাগুলোয় প্রচণ্ড চুলকানি অনুভূত হয়। একই রকম পানিপূর্ণ দানা শরীরে ভেতরের নানা স্থানে, যেমন—মুখগহ্বর, জিহ্বা এবং চোখে দেখা যেতে পারে। চিকেনপক্সের টিকা দেওয়া থাকলে শতভাগ ক্ষেত্রে রোগাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। তবে ওয়াইন্ড টাইপের ভাইরাসের মাধ্যমে আক্রান্ত হলে টিকা দেওয়া থাকলেও রোগাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

প্রতিরোধ : চিকেনপক্স ছোঁয়াচে বলে আক্রান্ত শিশুকে অন্যদের থেকে দূরে রাখতে হবে। র‌্যাশগুলো চোখে পড়ার দুয়েক দিন আগে থেকে জলবসন্তের জীবাণু ছড়াতে থাকে। চিকেনপক্সের টিকা দিয়ে এ রোগের বিরুদ্ধে দীর্ঘকালীন প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলা সস্তব। ৯ মাস বয়সের পর থেকেই এ টিকা দেওয়া যায়। ১২ বছর পর্যন্ত একটি ডোজ ও ১২ বছরের বেশি হলে দুটি ডোজ (দুই সপ্তাহের ব্যবধানে) দিতে হয়। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দেওয়া উচিত। ’

লেখক : অধ্যাপক, বিএসএমএমইউ

চেম্বার : আলোক হেলথ কেয়ার লিমিটেড

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন