ফুটবলপ্রেমীদের কাছে খুবই পরিচিত নাম পিয়েরলুইজি কোলিনা। মুণ্ডিত মস্তক ও নীল চোখের এই ইতালিয়ান রেফারি দীর্ঘ এক দশক আন্তর্জাতিক ফুটবলে দাপটের সঙ্গে রেফারিং করেছেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত টানা ছয় বছর ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফুটবল হিস্ট্রি অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকসের (আইএফএফএইচএস) ‘বিশ্বসেরা রেফারির’ খেতাব জিতেছেন তিনি।
কঠোরতা ও নির্ভুল রেফারিংয়ের জন্য খ্যাতি ছিল কোলিনার। পান থেকে চুন খসলেই খেলোয়াড়দের হলুদ কার্ডের শাস্তি দিতেন। সেই কোলিনাই কিনা ২০০২ বিশ্বকাপের ফাইনাল পরিচালনা করতে গিয়ে লোভে পড়ে একটা ইচ্ছাকৃত ভুল করেছিলেন!
ইচ্ছাকৃত সেই ভুলের কথা সাবেক ইতালিয়ান রেফারি সম্প্রতি বলেছেন লা রিপাবলিকা পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। তবে কোলিনার সেই ইচ্ছাকৃত ভুলে ম্যাচের ফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি। ২০০২ বিশ্বকাপের একটি স্মারক সংগ্রহের লোভে পড়ে ফাইনাল ম্যাচ সমাপ্তির বাঁশি কয়েক সেকেন্ড পর বাজিয়েছিলেন কোলিনা।
জার্মানিকে ২–০ গোলে হারিয়ে ব্রাজিলের বিশ্বকাপের শিরোপা জেতা সেই ম্যাচ নিয়ে কোলিনা বলেছেন, ‘আমার কাছে এমন একটি সংগ্রহ আছে, যেটা শুনলে ফুটবল–জাদুঘর হিংসা করবে।’
তার সেই সংগ্রহ ২০০২ বিশ্বকাপ ফাইনালের বল। লম্বা রেফারিং ক্যারিয়ারে অনেক স্মারকই হয়তো জমিয়েছেন কোলিনা; কিন্তু এটা যে তার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান, সেটা কোলিনার কথায়ই স্পষ্ট।
বলটি যেন তিনি সহজেই নিজের আয়ত্তে নিতে পারেন, এর জন্য অপেক্ষা করতে গিয়েই দেরিতে খেলা সমাপ্তির বাঁশি বাজাতে হয়েছিল কোলিনাকে, ‘আমার কাছে ২০০২ বিশ্বকাপ ফাইনালের বলটি আছে। সেদিন আমি হয়তো ১৩ বা ১৪ সেকেন্ড পর (শেষ) বাঁশি বাজিয়েছি, এটা ফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি। আমি শুধু নিশ্চিত করতে চেয়েছি, বলটি যেন আমার হাতে আসে আর আমি সেটা বাড়িতে নিয়ে যেতে পারি।’
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে বলটি নিয়ে কী হয়েছিল, সেই বর্ণনাও দিয়েছেন কোলিনা, ‘পুরস্কার বিতরণীতে আমি পদক আনতে যাওয়ার আগে সংগঠকদের একজন বলেছিল, ‘পিয়েরলুইজি বলটি আমার কাছে রেখে যাও, পরে নিয়ে যেও।” আমি বলেছিলাম, কোনো সুযোগ নেই, বলটি আমার কাছেই থাকুক। অনুষ্ঠানের ছবিগুলোতে দেখবেন, সারাক্ষণই বলটি আমি হাতে রেখেছিলাম।’