সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে শিরাপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। কোপা আমেরিকার। মেক্সিকোকে হারিয়ে সেই যে শিরোপার উল্লাসে ভেসেছিলেন আর্জেন্টাইনরা, এরপর আর কোনো কিছু জেতা হয়নি। অনেক চেষ্টা, অনেক কিছুর পর অবশেষে ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আরেকটি কোপা আমেরিকা জিতলো মেসির আর্জেন্টিনা।
তবে মারাকানায় ব্রাজিলকে হারিয়ে আকাশী-সাদা সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটলেও কোথায় যেন একটা আক্ষেপ রয়ে গেছে। শিরোপা জিতলেও, সেই ছবিটা যে তাদের প্রিয় ম্যারাডোনার দেখে যাওয়া হল না!
ফুটবল বিশ্বকে কাঁদিয়ে গত বছর ২৫ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ম্যারাডোনা। বয়স হয়েছিল তখন তার ৬০ বছর। মাঠে বসে তিনি দেখে যেতে পারলেন না লিওনেল মেসি, এঞ্জেল ডি মারিয়াদের সাফল্য, জীবদ্দশায় যেটা ছিল তার বহুকাঙ্ক্ষিত।
আর্জন্টিনার একটি শিরোপার জন্য কত আকুতি ছিল ম্যারাডোনার। কত আকাঙ্খা। কত পরামর্শ, কতভাবেই না দলকে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি। কিন্তু মেসিরা তার জীবদ্ধশায় বারবার ফাইনালে উঠলেও শিরোপার স্বাদ দিতে পারেননি তাকে। তিনি মৃত্যুবরণ করার পর অবশেষে শিরোপাটা জিতলেন মেসিরা।
আর্জেন্টিনার খেলা হলেই ম্যারাডোনা ছুটে যেতেন মাঠে। দুই হাত উঁচিয়ে, বুকটা চিতিয়ে শিশুসূলভ উল্লাসে ফেটে পড়তেন। শেষ পর্যন্ত হতাশায় ডুবে মাঠ ছাড়তে হতো তাকে। দিনের পর দিন এই একই ছবি দেখেছিল ফুটবল বিশ্ব। টুর্নামেন্টের পর টুর্নামেন্ট।
হ্যাঁ, তিনি দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা; আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপের নায়ক। ফুটবলের রাজপূত্র। আজকের দিনে বেঁচে থাকলে তিনি হয়তো মারাকানার গ্যালারিতে থাকতেন। উচ্ছ্বাস, উল্লাসে ফেটে পড়তেন মেসিদের অর্জনে। গভীর আলিঙ্গনে বাঁধতেন প্রিয় শিষ্য মেসিকে।
ব্রাজিলের ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে ১-০ গোলে হারিয়ে, স্বাগতিকদের কাঁদিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ২২তম মিনিটের গোলে জয়ের নায়ক ডি মারিয়া।
এগিয়ে যাওয়ার পর রক্ষণ জমাট করে লিওনেল স্কালোনির দল ধরে রাখে ব্যবধান। এবারের আগে সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে কোনো বড় টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। এরপর থেকে আর সাফল্য ধরা দিচ্ছিল না।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ছয়টি ফাইনাল থেকে ফিরতে হয়েছিল শূন্য হাতে। আর সব প্রতিযোগিতা থেকে মাথা নিচু করে ফিরেছিলেন ম্যারাডোনাও। তবে আজ তিনি মাঠে থাকলে ছবিটা হয়তো বদলে যেত।