নাসিম রুমি: টানা দুই ম্যাচের হতাশা পেছনে ফেলে দলকে পথে ফেরাতে আপন আলোয় উদ্ভাসিত হলেন লিওনেল মেসি। উপহার দিলেন অসাধারণ এক হ্যাটট্রিক, সঙ্গে সতীর্থদের দিয়ে করালেন আরও দুটি গোল। অধিনায়কের এমন দ্যুতিময় ম্যাচে বলিভিয়াকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করল আর্জেন্টিনা।
বুয়েনস আইরেসে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি ৬-০ গোলে জিতেছে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
কলম্বিয়ার বিপক্ষে হারের পর গত ম্যাচে ভেনেজুয়েলার মাঠে ড্র করে বসে আর্জেন্টিনা। যেকোনো মূল্যে জয়ে ফেরার লক্ষ্যে মেসি, লাউতারো মার্তিনেস ও হুলিয়ান আলভারেসকে নিয়ে শক্তিশালী আক্রমণভাগ সাজান কোচ লিওনেল স্কালোনি।
তার পরিকল্পনা কাজে লেগেছে শতভাগ; গোল পেয়েছেন আক্রমণভাগের অন্য দুই তারকাও। বদলি নেমে অন্য গোলটি করেছেন থিয়াগো আলমাদা।
১০ ম্যাচে ৭ জয় ও ১ ড্রয়ে ২২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আর্জেন্টিনা। ৩ পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে কলম্বিয়া।
নিজেদের গুছিয়ে নিতে একটু সময় নেয় আর্জেন্টিনা। এরপর এগিয়ে যেতে দেরি হয়নি তাদের। ১৯তম মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলে মার্তিনেসের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে কাছের পোস্ট দিয়ে গোলটি করেন মেসি।
৩৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারতো। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে বাঁকানো ফ্রি কিক নেন মেসি, রক্ষণপ্রাচীরের ওপর দিয়ে বল লক্ষ্যেই ছিল। দারুণ নৈপুণ্যে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক।
আট মিনিট পর ঠিকই দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়নরা। এই গোলেও জড়িয়ে মেসি-মার্তিনেসের নাম, তবে এবার ভিন্ন ভূমিকায়।
এক সতীর্থের থ্রু বল ধরে এগিয়ে যান আর্জেন্টিনা অধিনায়ক, তিনি নিজেই শট নিতে পারতেন; কিন্তু আরও নিশ্চিত হতে বাঁদিকে মার্তিনেসকে খুঁজে নেন তিনি। আর বল পায়ে বিনা বাধায় বক্সে ঢুকে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন ইন্টার মিলান ফরোয়ার্ড।
দুই গোল হজমের ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই আরও পিছিয়ে পড়ে বলিভিয়া। মাঝমাঠ থেকে মেসির উঁচু করে বাড়ানো দারুণ থ্রু বল বক্সে ঠাণ্ডা মাথায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে, দ্বিতীয় ছোঁয়ায় কোনাকুনি শটে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন আলভারেস।
৬৫তম মিনিটে একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন করেন আর্জেন্টিনা কোচ। তারই একটিতে আলভারেসের জায়গায় নামেন আলমাদা। আর মাঠে নামার চার মিনিটের মধ্যে নাহুয়েল মোলিনার পাস বক্সের মাঝে পেয়ে প্লেসিং শটে স্কোরশিটে নাম লেখান বতাফোগোর মিডফিল্ডার আলমাদা।
ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা বলতে গেলে কেটে যায় আগের গোলেই। বাকি ছিল মেসির জাদুকরী পারফরম্যান্সের পূর্ণতা পাওয়ার। শেষদিকে দুই মিনিটের ব্যবধানে দুবার জালে বল জড়িয়ে তাই করলেন আটবারের ব্যালন দ’র জয়ী।
৮৪তম মিনিটে এসেকিয়েল পালাসিওসের পাস পেয়ে ডান পায়ের শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন মেসি। এরপর নিকো পাসের বাড়ানো বল ধরে বক্সের মধ্য থেকে বাঁ পায়ের শটে জাতীয় দলের হয়ে দশম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতার মোট গোল হলো ১১২টি। ১৩৩টি গোল নিয়ে চূড়ায় তার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।