সব ধরনের ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন ইতালির কিংবদন্তি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন। ২৮ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার শেষে বুট এবং গ্লাভস জোড়া তুলে রাখারসিদ্ধান্ত নিলেন জুভেন্টাস কিংবদন্তি গোলরক্ষক বুফন।
৪৫ বছর বয়সী বুফনের বর্তমান ক্লাব পারমার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০২৪ সাল পর্যন্ত। তবে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন তিনি।
জুভেন্টাস ছেড়ে ২০২১ সালে ইতালির আরেক ক্লাব পারমায় যোগ দিয়েছিলেন ইতিহাসের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক বুফন। এই পারমার হয়েই প্রায় তিন দশক আগে সিরি আতে পেশাদার ফুটবল খেলা শুরু করেছিলেন তিনি। গত বছর দলটির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেন তিনি। এতে আগামী বছরের গ্রীষ্ম পর্যন্ত সেখানে থাকার ছিল তার। কিন্তু আগেভাগেই বুটজোড়া তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।
বুফনের এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে চোটের বড় ভূমিকা। গত দুই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে পারমার হয়ে মাত্র ৪৩ ম্যাচ খেলতে পারেন তিনি। যদিও বয়স চল্লিশ বছর পার হওয়ার পরও খেলা চালিয়ে যাওয়াটাই বিস্ময়ের ব্যাপার।
১৯৯৫ সালে পার্মার জার্সিতে শীর্ষ পর্যায়ের ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০০১ পর্যন্ত ওই ক্লাবেই ছিলেন তিনি। এরপরই চলে আসেন জুভেন্টাসে। তুরিনের বুড়িদের হয়ে খেলেছেন টানা ১৭ বছর। ২০০১ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ছিলেন ক্লাবটিতে।
২০০৬ সালে অনিয়মের দায়ে জুভেন্টাস ২য় বিভাগে নেমে যায়। সেবার জুভেন্টাসের সকল তারকা ক্লাব ছেড়ে গেলেও রয়ে যান বুফন। আরেক কিংবদন্তি আলেসান্দ্রো ডেল পিয়েরোকে নিয়ে জুভেন্টাসকে ফিরিয়ে আনেন শীর্ষ বিভাগের ফুটবলে। একইবছর ইতালির হয়ে জিতেছেন বিশ্বকাপ শিরোপাও।
বুফনের নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে বহু অর্জন। জুভদের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার কীর্তি তার। তিনি সব মিলিয়ে খেলেছেন ৬৮৫ ম্যাচ। এই তালিকায় তার উপরে আছেন আরেক ইতালিয়ান কিংবদন্তি আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো।
বিশ্বের অন্যতম সেরা লিগ সিরি আর রেকর্ড বইতে বুফন অবস্থান করছেন সগর্বে। সিরি আতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা (৬৪৮) এবং একটানা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে গোল হজম না করা (৯৭৪ মিনিট) রেকর্ড তার দখলে। সিরি আ যুগে অর্থাৎ ১৯২৭ সাল থেকে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জয়ের (দশটি) রেকর্ডও গড়েছেন তিনি।
গত পাঁচ বছর ধরে কেবল ক্লাব ফুটবলই খেলছিলেন বুফন। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার তিনি শেষ করেছিলেন ২০১৮ সালে। ইতালি জাতীয় দলে ১৯৯৭ সালে অভিষেকের পর রেকর্ড ১৭৬ ম্যাচ খেলেন তিনি। আজ্জুরিদের হয়ে ২০০৬ সালে তিনি পেয়েছিলেন বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ।