লিওনেল মেসির ব্যাপারে নিন্দুকের একসময়ের অভিযোগ ছিল বার্সেলোনা দলে যতটা প্রাণখোলা থাকেন, জাতীয় দলে ততটা দেখা যায় না আর্জেন্টাইন জাদুকরকে। কিন্তু গত কয়েকবছরে পুরোপুরি বদলে গেছে এই চিত্র। এখন যেন জাতীয় দলে যোগ দিলেই প্রাণোচ্ছ্বল হয়ে যান মেসি।
আর্জেন্টিনার টানা ৩৪ ম্যাচের অপরাজিত যাত্রার অন্যতম কারিগর দলের অধিনায়ক মেসি। সমানতালে গোল-অ্যাসিস্ট করে দলকে জয় এনে দিচ্ছেন নিয়মিত। এছাড়া বলিষ্ঠ নেতৃত্বগুণে দলের বাকিদের কাছ থেকেও সেরা পারফরম্যান্স আদায় করে নিচ্ছেন মেসি।
গতবছর কোপা আমেরিকা ও চলতি বছর ফাইনালিসিমার শিরোপা জেতা আর্জেন্টিনা আসন্ন কাতার বিশ্বকাপেও অন্যতম ফেবারিট হিসেবে খেলা শুরু করবে। সি গ্রুপে তাদের মুখোমুখি হতে হবে সৌদি আরব, পোল্যান্ড ও মেক্সিকোর বিপক্ষে।এরপর ক্রমেই কঠিন সব প্রতিপক্ষের মোকাবিলা করতে হবে আলবিসেলেস্তেদের।
তবে প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবতে রাজি নন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক মেসি। তার মতে প্রতি ম্যাচের আগে নিজেদের যথাযথ প্রস্তুত করাই মূল লক্ষ্য। এরপর মাঠে নিজেদের কাজ ঠিকঠাক করার দিকেই জোর দিয়েছেন মেসি। বুলগেরিয়ান কিংবদন্তি রিস্টো স্টইচকভের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলেছেন সাতবারের ব্যালন ডি অর জয়ী তারকা।
মেসি বলেছেন, ‘এই আর্জেন্টিনা যে কাউকে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। প্রতি ম্যাচে কী করতে হবে সেটি আমাদের কাছে পরিষ্কার। প্রতিপক্ষ যারাই হোক না কেন, আমাদের কোচিং স্টাফ প্রতিটি ম্যাচকে সামনে রেখে সবাইকে দারুণভাবে প্রস্তুত করে। সামনে যারাই হোক না কেন, আমরা একইভাবে এগিয়ে যাই।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে একইভাবে খেলছি। আমাদের লক্ষ্য হলো এই পথ ধরেই এগিয়ে যাওয়া এবং বিশ্বকাপে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করা। আমরা জানি বিশ্বকাপ খুবই কঠিন। যেখানে ছোট ভুল আপনার কাছ থেকে শিরোপা ছিনিয়ে নিতে পারে। তবে আমরা যে কারও মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।’
এসময় বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব সম্পর্কে মেসি বলেন, ‘গ্রুপপর্ব সবসময় কঠিন হয়। গত বিশ্বকাপেও অনেক কথা হয়েছে যে আমরা খুব সহজ গ্রুপ পেয়েছি এবং খেলা শুরুর আগেই পরের রাউন্ড নিয়ে কথা হচ্ছিল। কিন্তু দিন শেষে গ্রুপের ফল আমরা যেমন চেয়েছি তেমন হয়নি।’
মেসি বলতে থাকেন, ‘আমরা প্রথম ম্যাচ ড্র করি, ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে যাই এবং দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে বেগ পেতে হয়। এবার আমাদের খুব কঠিন গ্রুপ পড়েছে। আমরা এ বিষয়ে সচেতন। তাই প্রথম ম্যাচ জয় দিয়ে শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে তিন পয়েন্টের পাশাপাশি মানসিক স্থিরতাও আসে।’
ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোনোর কথা জানিয়ে মেসি বলেন, ‘এরপর আমরা মেক্সিকোর মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলবো। যারা খুব ভালো খেলে এবং বল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় থাকে। আমরা বিশ্বকাপে অনেকবার মুখোমুখি হয়েছি এবং তাদের খেলার ধরন সম্পর্কে জানি। আমরা তাই ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোবো। বিশেষ করে প্রথম ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে আছি।’