জাতীয় দল কিংবা ক্লাব ফুটবল- এখন তারা দু’জনই সতীর্থ। লিওনেল মেসি এবং লিয়ান্দ্রো পেরেদেস। এই দুই ফুটবলার কিন্তু এক সময় ছিল শত্রু। অবশ্যই সেটা ক্লাব ফুটবলে। শুধুই তাই নয়, দু’জন যখন মুখোমুখি হয়েছিলেন, তখন কয়েকটি কারণে পেরেদেসের ওপর খুবই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মেসি। এমনকি পেরেদেসের ভাষায়, মেসি সেদিন পারলে যেন তাকে খুনই করে ফেলে।
লিওনেল মেসির মাঠে নামা মানেই প্রতিপক্ষের কড়া নজরে থাকা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম লেগের ম্যাচে পেরেদেসের কড়া ট্যাকলের পর মেসি এতটাই রেগে গিয়েছিলেন যে, তাকে খুন পর্যন্ত করতে চেয়েছিলেন! ভয় পেয়ে মেসির আর্জেন্টাইন সতীর্থ প্রায় মাঠ ছেড়েই বাড়ি পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।
২০২০-২১ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচের সেই ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এনেছেন সেই ফুটবলার লিয়ান্দ্রো পেরেদেস নিজেই। ওই ম্যাচে পিএসজির কাছে ৪-১ গোলে হেরে গিয়েছিল মেসির বার্সেলোনা।
আসলে কী ঘটেছিল সেদিন? ২০২০-২১, তখন মেসি খেলেন বার্সেলোনার হয়ে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম লেগে তাদের মুখোমুখি প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি), যে দলটির হয়ে এখন খেলেন মেসি।
ওই ম্যাচেই পিএসজির হয়ে খেলা পেরেদেস একটি কড়া ট্যাকল করেন মেসিকে। মেসি তখন শান্তই ছিলেন। এ সময় পেরেদেস সতীর্থদের চিৎকার করে কিছু বলতে থাকেন। সেটাই কানে যায় মেসির। প্রচণ্ড রেগে যান তিনি।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে পেরেদেস বলেন, ‘আমি সতীর্থদের উপর চেঁচামেচি করায় মেসি রেগে গিয়েছিল। আমাকে সরাসরি এসে এমন কিছু কথা বলে, শুনে মনে হচ্ছিল সে আমাকে খুনই করে ফেলতে চায়। এ সময় তার থেকে বাঁচতে আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরে যেতে চেয়েছিলাম।’
তবে, সেদিন ম্যাচে কী ঘটেছিল, তা পুরোপুরি ভুলে যান মেসি। বিষয়টাকে কোনোভাবেই সামনে এগুতে দেননি। বরং, পেরেদেসের সঙ্গে পুরোপুরি স্বাভাবিক আচরণ করেন।
পেরেদেস সেটাই জানাচ্ছিলেন। তিনি জানান, ঘটনাচক্রে, কয়েক দিন পরেই আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে ডাক পান দু’জন। কিছুটা দুরুদুরু বুকেই সেখানে যোগ দেন পেরেদেস।
তবে গিয়ে সম্পূর্ণ অন্য চেহারার মেসিকে দেখেন। বার্সেলোনা ম্যাচে যে মেসিকে দেখেছিলেন, এই মেসি তার থেকে অনেক আলাদা। দেখে মনেই হয়নি আগে কিছু হয়েছে। পেরেদেস বলেছেন, ‘ওর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর মনেই হচ্ছিল না আমাদের মধ্যে কিছু হয়েছে। ব্যক্তি হিসেবে সে কত বড় সেটাই বোঝা যায়। আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক ছিল। এখন ওই প্রসঙ্গ উঠলে আমরা দু’জনেই হাসি; কিন্তু সেদিন পরিস্থিতি সত্যিই উত্তপ্ত ছিল।’
ওই ঘটনার পর কেটে গেছে অনেকটা সময়। বার্সেলোনা ছেড়ে মেসি এখন প্যারিসে, পেরেদেসের ক্লাব পিএসজিতেই। তারা দুজন এখন সতীর্থ। পেরেদেস বলেন, ‘আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের নিয়ে আমাদের একটা দল রয়েছে। সেখানে আমরা খুব মজা করি। ওকে মাঝে মাঝে স্টিকার পাঠাই। ও খুব হাসে।’