নাসিম রুমি: লিওনেল মেসি ও আনহেল ডি মারিয়া নেই। প্রথমজন চোট থেকে ফিরতে পারেননি, পরেরজন কোপা আমেরিকা জিতেই জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন। ২০১৩ সালের ১৫ অক্টোবরের পর এই প্রথম কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে দুই কিংবদন্তিকে ছাড়াই মাঠে নামল আর্জেন্টিনা। দুজনকে যেহেতু চিরকাল পাওয়া যাবে না, আর তাদের শূণ্যতা পূরণের প্রস্তুতিও তো নিতে হবে! বুয়েনস এইরেসে চিলির বিপক্ষে ম্যাচটা তাই একরকম পরীক্ষাই ছিল লিওনেল স্কালোনির দলের জন্য।
আর্জেন্টিনাকে সে পরীক্ষায় লেটার মার্কসসহ পাশ করালেন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, হুলিয়ান আলভারেজ ও বদলি হয়ে নামা পাওলো দিবালা। তাঁদের গোলে চিলিকে ৩–০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত আর্জেন্টিনা। তিনটি গোলই এসেছে দ্বিতীয়ার্ধে।
প্রথমার্ধে তেমন ভালো খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। গতিময় ফুটবল খেলার চেষ্টা করলেও বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে হিমশিম খেয়েছে। চিলিও গতির জবাব গতি দিয়েই দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রথমার্ধে একবার বল পোস্টে মারা ছাড়া তেমন কিছু করতে পারেনি।
তবে বিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধে ৩ মিনিটের মাথায় আর্জেন্টিনার করা গোলটি চোখ জুড়িয়ে দিতে পারে ভক্তদের। মাঝ মাঠে খেলার দিক পাল্টে ডান প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা রদ্রিগো দি পলকে পাস দেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার ক্রিস্টিয়ান রোমেরো। বল নিয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে চিলির বক্সের ডান কোণ বরাবর দৌড়ানো ফরোয়ার্ড হুলিয়ান আলভারেজকে পাস দেন মিডফিল্ডার দি পল। আলভারেজ চলতি বলই ক্রস করেন চিলির গোলপোস্টের সামনে। দৌড়ের সময় সামনে সেই ক্রস পেলেও ডামি করেন আরেক ফরোয়ার্ড লাওতারো মার্তিনেজ। বোকা বনে যায় চিলির রক্ষণ। কারণ ওখান থেকে যে কারও শট নেওয়াই স্বাভাবিক। মার্তিনেজ বলটি ছাড়ায় সুবিধাজনক অবস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা ম্যাক অ্যালিস্টার শট নিয়ে গোল করেন। আর্জেন্টিনার হয়ে এটি ম্যাক অ্যালিস্টারের তৃতীয় গোল।
নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ৬ মিনিট আগে আলভারেজের কাছ থেকে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি পায় আর্জেন্টিনা। চিলির বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের দারুণ শটে চোখ ধাঁধানো গোলটি করেন আতলেতিকো মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড।
ম্যাক অ্যালিস্টারের জায়গায় ৭৯ মিনিটে বদলি হয়ে নামা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার দিবালা আর্জেন্টিনাকে এনে দিয়েছেন তৃতীয় গোল। যোগ করা সময়ের ১ মিনিটে আলেহান্দ্রো গারনাচোর পাস পেয়ে বাঁ কোনো দুরহ জায়গা থেকে কোনাকুনি শটে গোল করেন মেসির ১০ নম্বর জার্সি পরে মাঠে নামা দিবালা।
ম্যাচ শুরুর আগে ডি মারিয়াকে সম্মাননা জানিয়েছে আর্জেন্টিনা দল। পরিবার নিয়ে মাঠে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এই উইঙ্গার।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে ৭ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় উরুগুয়ের চেয়ে ৫ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে স্কালোনির দল। শীর্ষ ৬টি দল সরাসরি ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে। সপ্তম দলকে খেলতে হবে প্লে অফ।