বিশ্বকাপই খেলতে পারেননি বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার আরলিং হালান্ড। কারণ তার দেশ নরওয়ে’ই বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। তবে বিশ্বকাপের বিরতির পর মাঠে ফিরেই বিধ্বংসী রূপে ধরা দিয়েছেন হালান্ড। তার দুর্দান্ত ফর্মের ওপর ভর করে বুধবার রাতে লিডস ইউনাইটেডকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি।
জোড়া গোল করেছেন আরলিং হালান্ড। বিশ্বকাপ শুরুর আগে প্রিমিয়ার লিগে শেষ ম্যাচে ব্রেনফোর্ডের কাছে ২-১ গোলে হারতে হয়েছিল হালান্ডদের। বিশ্বকাপের আগে সেই হারের ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
এই জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে ম্যানসিটি। ১৫ ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ৩৫। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের চেয়ে ৫ পয়েন্ট পিছিয়ে তারা।
লিডসের বিপক্ষে এই ম্যাচের শুরু থেকেই নিজেদের দাপট বজায় রেখে খেলতে থাকে ম্যানসিটি। তবে লিডসও চেষ্টা চালায় পরতিপক্ষকে আটকে রাখার। যে কারণে প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটা সময় ম্যানসিটিকে আটকে রাখতে সক্ষম হয় লিডস।
তবে প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে এসে অর্থাৎ অতিরিক্ত সময়ে গোল করেন রদ্রি। প্রথমার্ধে দলকে এগিয়ে দেওয়ায় অনেকটাই অক্সিজেন পায় ম্যানসিটি। যা দ্বিতীয়ার্ধে কাজে লাগালেন সিটি ফুটবলাররা। বলা ভালো দ্বিতীয়ার্ধেই দাপুটে ফুটবল খেললেন হালান্ড।
দ্বিতীয়ার্ধেই জোড়া গোল করেন হালান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামার পরই অর্থাৎ ৫১ মিনিটের মাথায় নিজের প্রথম গোল করেন হালান্ড। পরপর দুই গোল হজম করে কোনঠাসা হয়ে পড়ে লিডস। এখানেই থেমে থাকেনি পেপ গার্দিওলার শীর্ষরা।
অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষকে নিয়ে কার্যত ছেলেখেলা করতে শুরু করে ম্যানসিটির ফুটবলাররা। নিজেদের আক্রমনের গতি বজায় রেখে ৫৬ মিনিটের মাথায় ফের গোল করেন হালান্ড। জয়সূচক গোলটি করে লিডসের কফিনে পরাজয়ের শেষ পেরেকটি গেঁথে দেন তিনি।
এরপর আর কোনও গোল পায়নি ম্যানসিটি। তবে তিন গোল হজম করার পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে লিডস ইউনাইটেড। যে ধারাবাহিকতায় ৭৩ মিনিটের মাথায় গোল করে ব্যবধান কমায় লিডস। ম্যানসিটির ডিফেন্সকে বোকা বানিয়ে গোল করেন পাসকাল স্ত্রাইক। এরপর ম্যানসিটি কিছুটা হলেও ডিফেন্সিভ ফুটবল খেলায় দুই দলই আর গোল করতে পারেনি।
জোড়া গোল করে রেকর্ডের পাতায় আবারও নাম লিখলেন হালান্ড। প্রিমিয়ার লিগে এ নিয়ে ১৯ এবং ২০তম গোল করলেন তিনি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো ফুটবলার জানুয়ারির আগে ২০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন। বিশ্বকাপের বিরতি না ঘটলে এই রেকর্ড আরো বড় হতে পারতো হালান্ডের।
তবে এই ম্যাচে আলফি হালান্ডের রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেলেন তার পুত্র আরলিং হ্যালান্ড। প্রিমিয়ার লিগে আলফি হ্যালান্ডের ১৮ টি গোল করতে সময় লেগেছিল ১৮১ ম্যাচ। কিন্তু তার ছেলে আরলিং সময় নিলেন মাত্র ১৪ ম্যাচ। অনেক কম ম্যাচে খেলেই বাবার রেকর্ডকে ভেঙে দিলেন আরলিং। মজার বিষয় হলো আলফি হালান্ড খেলতেন লিডসের হয়ে। লিডসেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন আরলিং হালান্ড।
ম্যান সিটির পরবর্তী ম্যাচ এভারটনের বিরুদ্ধে বছরের শেষ দিনে।