মাস্ক খুলে কিলিয়ান এমবাপে গতিময় ফুটবলে আক্রমণভাগের নেতৃত্বও দিয়েও গোল পেলেন না। বরং ১৬ বছর বয়সেই পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে আসা লামিনে ইয়ামাল সব আলো কেড়ে নিলেন। চমৎকার এক গোলে দলকে পথ দেখালেন তিনি। পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা সামলে, ফ্রান্সকে হারিয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠল স্পেন।
মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় মঙ্গলবার (০৯ জূলাঈ) দিবাগত রাতে প্রথম সেমি-ফাইনালে ২-১ গোলে জিতেছে লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল। গতি আর নান্দনিক ফুটবলে আসরে ছয় ম্যাচ খেলে সবগুলোই জিতল স্পেন। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে তিনটি গোলই হয়েছে ২৫ মিনিটের মধ্যে। রান্দাল কোলো মুয়ানির গোলে পিছিয়ে পড়া স্পেন সমতায় ফেরে ইয়ামালের গোলে। তাদের জয়সূচক গোলটি করেন দানি ওলমো।
মিউনিখে দারুণ শুরু করেছিল ফ্রান্স। মাত্র ৮ মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে গিয়েছিলো তারা। এমবাপের ক্রস থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল করেন রান্ডাল কুলো মুয়ানি। এতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। চলতি ইউরোতে এই প্রথম প্রথমার্ধে গোলের দেখা পেল ফরাসিরা।
স্পেন যে এবারের ইউরোতে দুর্দান্ত, সেটি প্রমাণ করতে সময় নেয়নি বেশি। ২১ মিনিটে লামিন ইয়ামালের চোখ ধাঁধানো গোলে সমতায় ফেরে স্পেন। আলভারো মোরাতার অ্যাসিস্ট থেকে বাঁপায়ের দারুণ শটে ফরাসিদের জালে কম্পন ধরিয়ে দেন ১৬ বছর বয়সী এই কিশোর।
অল্প সময়ের মধ্যে সমতায় ফিরেও গোলক্ষুধা একটুও কমেনি স্পেনের। ৪ মিনিট পরই আবার গোল করে স্প্যানিশরা। দানি ওলমোর গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় লুইস ডি লা ফুয়েন্তের দল। ডি-বক্সের মাঝখান থেকে দুই ফরাসি ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে শট নিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন স্প্যানিশ এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ও উইঙ্গার। এরপর আরও কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করে দুই দল। গোল পায়নি কেউ। অবশেষে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় স্পেন।
দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিযোগিতা আরও কঠিন হতে শুরু করে। দুই দলই তাদের আক্রমণের ধার বাড়ায়। তবে আক্রমণ বেশি এসেছে ফরাসিদের পা থেকেই। ৫৩ মিনিটে ওসুমানে ডেম্বেলের ক্রস থেকে দারুণ হেড নিয়েছিলেন অরেলিয়েন চুয়োমেনি। তবে স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমন তার শট সেভ দেন।
৩ মিনিট পর আক্রমণে আসেন এমবাপে। এবার আন্দ্রিয়েন রাবিয়তের অ্যাসিস্ট থেকে এমবাপের করা শটটি ব্যর্থ করেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক। ৬৩ মিনিটে আবার গোলের সুযোগ তৈরি করে ফ্রান্স। এবার ৬ গজের বক্সের ভেতর থেকে দায়ত উপামেকানোর করা হেড গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। তাকে কর্নার আসা বল নিয়ে ক্রস দিয়েছিলেন ডেম্বেলে।
৮৫ মিনিটে বল নিয়ে দুরন্ত গতিতে এমবাপে এগিয়ে এসে বল মেরে গোলবারের অনেকটা উপর দিয়ে। ৮৯ মিনিটে একটি আক্রমণ করে স্পেন। তবে ফরাসি ডিফেন্ডাররা সেটি ব্লক করে দিতে সমর্থ হন।
এরপর স্পেনের লক্ষ্য ছিল রক্ষনাত্মক ভঙ্গিতে খেলে ম্যাচটি শেষ করা। কোনোভাবেই গোল হজম করা যাবে না। স্পেনের নেমে খেলার কারণে আক্রমণের সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। শেষ মুহূর্তে আন্টোনিও গ্রিজম্যানের একটি হেড গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরই শেষবারের মতো বাঁশি বাজান রেফারি। এতে ফাইনালে যাওয়ার আনন্দ উদযাপন করতে শুরু করে স্প্যানিশরা।