ইনজুরির সঙ্গে পেরে না উঠে ফুটবল ক্যারিয়ারকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী তারকা মেসুত ওজিল। জার্মানি ও আর্সেনালের সাবেক এই তারকা প্লেমেকার তুরস্কে তার বর্তমান ক্লাব ইস্তানবুল বাসাখসেহিরির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফলে ৩৪ বছর বয়সী সাবেক এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকাকে আর ফুটবল মাঠে খেলতে দেখা যাবে না।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) তুর্কি লিগে কায়সারিস্পোরের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে যায় ওজিলের ক্লাব বাসাখসেহিরি। কিন্তু ম্যাচের প্রথমার্ধের খেলা শেষে মাঠ থেকে বিদায় নেন ওজিল। দলটির হয়ে সব মিলিয়ে ৩৬টি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মাঠে নামা ওজিল ইনজুরির কাছে হার মেনে চলতি মৌসুমে মাত্র চার ম্যাচে মাঠে নামতে পেরেছেন। তাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
ফুটবলভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট গোলডটকম তুরস্কের সাংবাদিক ইয়াকুপ চিনার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ওজিল তার অবসরের বিষয়ে এরই মধ্যে সতীর্থদের জানিয়ে দিয়েছেন।
বিশ্বের অন্যতম সেরা প্লেমেকার ধরা হয় ওজিলকে। তিনি ২০০৬ সালে জার্মানির বয়সভিত্তিক দল এবং ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জার্মানি জাতীয় ফুটবল দলে খেলেছেন। ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবল মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হন এবং গোল্ডেন বল অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করা হন।
ওজিলের পেশাদার ক্যারিয়ারের শুরু হয় ২০০৬ সালে জার্মান ক্লাব শালকের হয়ে। এরপর বুন্দেসলিগার ক্লাব ওয়ের্ডার ব্রেমেনে যোগ দেন তিনি। সেখানে তিন মৌসুমে ৭১ ম্যাচে ১৩ গোল করেন তিনি।
এরপর স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে ১০৫ ম্যাচে ১৯ গোল করেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। সেখানে লা লিগা ও কোপা দেল রে জয়ের পর ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওজিল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব আর্সেনালে ৪৩ মিলিয়ন পাউন্ডে যোগ দেন ওজিল। সেখানে ১৮৪ ম্যাচে ৩৩ গোল করে দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
জার্মানির জার্সিতে ২০০৯-২০১৮ সাল পর্যন্ত খেলেন ওজিল। জার্মানির হয়ে ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এর আগে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৮টি গোল করার মাধ্যমে বাছাইপর্বের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন ওজিল।
কিন্তু ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের পরপরই হুট করে অবসর নিয়ে ফেলেন ওজিল। ফলে জার্মানির হয়ে তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়। দেশটির হয়ে ৯২ ম্যাচে ২৩ গোল করেছিলেন তিনি।
ওজিলের বিদায়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল। সেই সময় জার্মান ফুটবল অ্যাসেসিয়েশনের (ডিএফবি) বিরুদ্ধে বর্ণবাদ ও জাতিগত বিদ্বেষের অভিযোগ তুলেছিলেন এই ফুটবলার। এরপর রাগে অভিমানে তুরস্কে পাড়ি দিয়েছিলেন এবং সেখানেই ক্যারিয়ার শেষ করতে যাচ্ছেন বিশ্বের সেরা এই প্লেমেকার।