নাসিম রুমি: পেশাদার ক্যারিয়ারে ৯০০ গোলের মাইলফলক পেরোনোর পর হাজার গোলের আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। দারুণ ফর্মে থাকলেও এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই বছর খেলা চালিয়ে যেতে হবে পর্তুগিজ তারকাকে। কিন্তু ৪০ বছর বয়সে পা রাখতে যাওয়া এ স্ট্রাইকার ততদিন কি খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন?
পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন (এফপিএফ) থেকে সম্মানসূচক বিশেষ পুরস্কার গ্রহণকালে রোনালদো নিজেই সে উত্তর দিয়েছেন। জানিয়েছেন, ১০০০ গোল স্পর্শের আকাঙ্ক্ষার কথা জানালেও, হয়তো তার আগেই বিদায় নিতে পারেন তিনি।
পেশাদার ক্যারিয়ারে রোনালদোর যাত্রা শুরু ২০০২-০৩ মৌসুমে। এরপর পার করেছেন দুই দশকের বেশি সময়। জাতীয় দলের পাশাপাশি রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, জুভেন্টাস কিংবা আল নাসর; যখন যে দলের হয়েই মাঠে নেমেছেন, দ্যুতি ছড়িয়েছেন। ৩৯ বছর পেরিয়েও পারফরম্যান্সে এখনো চিরতরুণ এ স্ট্রাইকার। জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে ইতোমধ্যে করেছেন ৯০৮ গোল। তার লক্ষ্য এবার হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করা।
কিন্তু আগামী ফেব্রুয়ারিতে ৪০ বছর পূর্ণ হতে যাওয়া রোনালদোর জন্য এ আকাঙ্ক্ষা পূরণ করাটা বেশ কঠিন-ই। লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আরও দুই থেকে আড়াই বছর তাকে ফর্মে থেকে খেলা চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু যে বয়সে খেলা চালিয়ে যাওয়াটাই দুঃসাধ্য, সেখানে এতগুলো গোল করা কি সহজ কথা?
রোনালদোও বলছেন, ওত লম্বা সময় নিয়ে তিনি চিন্তা করছেন না। হাজারতম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে না পারলেও তার আফসোস থাকবে না। কারণ ইতোমধ্যে তিনি ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে গেছেন।
রোনালদো বলেন, ‘আমি বর্তমান সময়টা মোকাবিলা করছি। আমি লম্বা সময় নিয়ে এখন আর চিন্তা করতে পারছি না। আমি জনসম্মুখে বলেছিলাম, আমি ১০০০ গোলের মাইলফলকে পৌঁছাতে চাই। গত মাসে মাত্র আমি ৯০০ গোলে পা রেখেছি। এটা সময়ের ব্যাপার। দেখতে হবে আগামী কয়েক বছর আমার পা কতটা জবাব দেয়। যদি আমি ১০০০ গোলে পৌঁছাতে পারি, সেটা ভালো। কিন্তু যদি না পারি, আমি ইতোমধ্যে ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা। তবে এখন আমার ধারনা ১০০০ গোল করা সন্ভব হবেনা আমার পক্ষে।
পর্তুগিজ তারকা কথাগুলো বলেছেন, পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন থেকে সর্বোচ্চ মর্যাদার পুরস্কার গ্রহণের মঞ্চে। পর্তুগালের হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনন্য অবদানের জন্য তাকে বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করে দেশটির ফেডারেশন।
এ বিষয়ে এফপিএফের সভাপতি ফের্নান্দো গোমেজ বলেন, ‘সর্বোচ্চ মর্যাদার পুরস্কার প্লাটিনাম কিনাস এবং পর্তুগালের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে যদি কেউ এর যোগ্য হন, তাহলে নিঃসন্দেহে তিনি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তিনি জাতীয় দলকে ২০ বছরের বেশি সময় সেবা দিয়েছেন। পর্তুগাল দলের জন্য যদি কারো সীমাহীন ভালোবাসা থাকে, তাহলে সেটা রোনালদোর। অনন্য এক শুভেচ্ছাদূত, যদি পর্তুগাল ও জাতীয় দলের জার্সিকে অনুভব করেন।’
জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ২১৬ ম্যাচ খেলে ১৩৩ গোল করেছেন রোনালদো। জল্পনা আছে, ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলা চালিয়ে যেতে পারেন তিনি। কিন্তু বিশ্বমঞ্চের ওই আসরে খেলতে হলে ততদিন ফর্ম এবং ফিটনেস দুটোই ধরে রাখতে হবে রোনালদোকে।