কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে জাপানকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ক্রোয়েশিয়া। দলটি এবার মুখোমুখি হবে ফুটবল পরাশক্তি ব্রাজিলের। তবে ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলের পাশাপাশি আরও একটি বিষয় আলোচনার টেবিলে উঠে এসেছে। তা হলো কাতারের গ্যালারিতে একজন ক্রোয়েশিয়ান সুন্দরীর উপস্থিতি।
ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বেশ কিছু ছবি ভাইরাল হয়েছে। সেগুলোতে তাকে দেখা গেছে স্বল্প বসনায়। একটি ছবিতে দেখা যায়, তিনি গ্যালারির সিঁড়ি বেয়ে নামছেন, আর তার দিকে চেয়ে আছেন কাতারের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি। এ সময় ওই তরুণীর পরনে ছিলো ক্রোয়েশিয়ার জার্সির নকশায় একটি অন্তর্বাস ও স্কিনফিট প্যান্ট।
এবারের বিশ্বকাপে দর্শকদের জন্য বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা দিয়েছিলো কাতার। এর মধ্যে একটি হলো খোলামেলা পোশাক পরা যাবে না। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কাতারের আইন অনুযায়ী শাস্তির ঘোষণাও দেওয়া হয়েছিলো। অথচ সেই নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা না করেই খোলামেলা রূপে গ্যালারি মাতিয়ে চলেছেন এই ক্রোয়েশিয়ান সুন্দরী! নেট দুনিয়ায় তাকে কাতার বিশ্বকাপের সবচেয়ে ‘আবেদনময়ী’ ভক্ত হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
জানা গেছে, কাতারের গ্যালারি কাঁপানো এই সুন্দরীর নাম ইভানা নল। তিনি সাবেক মিস ক্রোয়েশিয়া। নিজ দেশের খেলার সময় তিনি মাঠে উপস্থিত হন, আর উৎসাহ দেন লুকা মদরিচ ও তার সহযোদ্ধাদের। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) কাতারের আল জানোউব স্টেডিয়ামে জাপান বনাম ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচের সময়ও হাজির হয়েছেন ইভানা। এ সময় তার পরনে ছিলো একটি টপ ও শর্ট জিনস।
স্টেডিয়ামের বাইরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ইভানা নল। তার ভাষ্য, ‘প্রথমে আমি ভেবেছিলাম, যদি এখানে (কাতার) বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে তাদের উচিৎ সেসব বিষয় নিশ্চিত করা, যা ভক্তদের স্বাচ্ছন্দ্যে রাখবে। কোনও সীমাবদ্ধতা থাকবে না। কিন্তু পরে এখানকার কিছু নিয়মের কথা শুনি এবং আমি বিস্মিত হই। কাঁধ, গলা, পেট এসব দেখা যায় এমন পোশাক পরিধানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে শুনে অবাক হয়েছি। আমার মনে হচ্ছিলো, সবকিছু ঢেকে রাখার মতো পোশাক তো আমার কাছে নেই।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে ইভানা আরও বলেন, ‘আমি খুব রাগান্বিত যে, আমি তো মুসলমান নই। ইউরোপে আমরা যদি হিজাব-নিকাবকে সম্মান দিতে পারি, তাহলে আমাদের জীবনধারাকেও তাদের সম্মান জানানো উচিত। আমাদের ধর্ম, পোশাক এসবকে সম্মান দেওয়া উচিত, কারণ আমি ক্রোয়েশিয়ার একজন ক্যাথলিক, এখানে এসেছি শুধুমাত্র বিশ্বকাপের জন্য, নিজের দেশকে সাপোর্ট করার জন্য।’
ইভানা জানান, কাতারে আসার পর তিনি অবাক হয়েছেন; কারণ এখানে তার পোশাক নিয়ে সেরকম কোনও কড়াকড়ি নেই। শুধুমাত্র সরকারি ভবন ছাড়া যেকোনও জায়গায় নিজের ইচ্ছেমতো পোশাক পরা যায়।
এরপরও গ্রেফতার হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায় না? এমন প্রশ্নের জবাবে ইভানা নলের স্পষ্ট জবাব, ‘আমি এসবে ভয় পাই না।’
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপেও পোশাক স্বাধীনতার জন্য আলোচনায় এসেছিলেন ইভানা নল।