English

27 C
Dhaka
শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

তিন যুগ পর আবারও বিশ্বকাপ জয়ের সামনে আর্জেন্টিনা

- Advertisements -

কাতার বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে সাড়ে আট বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করলো আর্জেন্টিনা। আবারও লিওনেল মেসি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলবেন। ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতানোর চেষ্টা থাকবে।

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথম সেমিফাইনালে লুজাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ০-৩ গোলের জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচ প্রমাণ করলো লিওনেল মেসি তো আছেনই আর্জেন্টিনার ম্যাচ জেতানোর মতো একজন হুলিয়ান আলভারেজও আছেন।

শুরুর বিশ মিনিট মেসি ছিলেন নিষ্প্রভ। মনে হচ্ছিল তিনি ম্যাচের গতিবিধি অনুসরণ করছেন, পর্যবেক্ষণ করছেন কোথায় কী হচ্ছে। এই সময়ে ক্রোয়েশিয়া গোলের সুযোগ তৈরি করতে না পারলেও দারুণ সব পাস আর বলের দখল নিয়ে খেলছিল।

কিন্তু আর্জেন্টিনার এনজো ফার্নান্দেজের রক্ষণভেদী পাস হুলিয়ান আলভারেজ পাওয়ার পর তাকে থামাতে সরাসরি শারীরিক সংঘর্ষ হয় ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার লিকাকোভিচের সাথে। রেফারি পেনাল্টি দিতে দেরি করেননি।

এই পেনাল্টি নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও বিবিসি রেডিও ফাইভ লাইভে বেশিরভাগ বিশ্লেষক পেনাল্টির পক্ষে মত দিয়েছেন। আলভারেজ ছিলেন একা সেখানে বল ছাড়াই তার সাথে গোলকিপারের শারীরিক সংঘর্ষের কারণে লিকাকোভিচ হলুদ কার্ডও দেখেছেন। লিওনেল মেসি পেনাল্টি নিয়ে কোনো ভুল করেননি।

যে মেসির আগের চার বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে কোনও গোল ছিল না, তিনি এবার দ্বিতীয় রাউন্ডে, কোয়ার্টার ফাইনালে এবং সেমিফাইনালে গোল করলেন।

ঠিক পাঁচ মিনিট পর আবারও হুলিয়ান আলভারেজ প্রায় মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে যান ক্রোয়েশিয়ার ডি বক্সে, আবারও গোল করলেন তিনি।

পাঁচ মিনিটের মধ্যে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আর্জেন্টিনার পক্ষে নিয়ে আসেন আলভারেজ। এরপর এখান থেকে ক্রোয়েশিয়ার ঘুরে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়।

বিবিসি স্পোর্টের শ্যামুন হাফেজ ছিলেন লুজাইল স্টেডিয়ামে, তিনি লিখেছেন এই সময় ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাটকো ডালিচ ফুটবলারদের মাথা ঠাণ্ডা রাখার পরামর্শ দিচ্ছিলেন। বারবার টাচলাইনে আসছিলেন তিনি।

বিবিসি রেডিও ফাইভ লাইভে ছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা অ্যালান শিয়েরার, তিনি বলেন, “ক্রোয়েশিয়া প্রথমার্ধে অনেক বল পেয়েও এমন কোনও সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। আর্জেন্টিনার জন্য কোনও হুমকিই ছিল না”।

এই সময় ক্রোয়েশিয়ার সব পাস যাচ্ছিলো পেছন দিকে, আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা চাপ সৃষ্টি করছিলেন দ্রুতগতিতে।

আলভারেজ মেসির কাজ অনেকটা সহজ করে দিচ্ছিলেন। মেসি যখন হাঁটাহাঁটি করছেন আলভারেজ তার হয়ে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের পিছু নিচ্ছেন, বলের পেছন দৌড়াচ্ছেন। মেসিকে নির্ভার লাগছিল তখন।

ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করছিলেন কোনও ফাঁক গলে বিশেষ কোনো পাসে সুযোগ তৈরি করার। কিন্তু লুজাইলের রাত ছিল লিওনেল মেসির।

মেসি আবারও এমন এক অ্যাসিস্ট করলেন বল পায়ে পেয়ে, আলভারেজ কেবল পা ছোঁয়ালেন আরও একটি গোল যোগ করলেন নিজের নামের পাশে।

লিওনেল মেসি তার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিলেন আরও একবার। চলতি বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ১২টি গোল করেছে, যার মধ্যে মেসি নিজে করেছেন পাঁচটি, করিয়েছেন চারটি। ততক্ষণে লুজাইল স্টেডিয়ামে শুরু হয়ে গেছে আর্জেন্টিনার উৎসব, ৩-০ গোলের জয় নিশ্চিত হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বলা যায় এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিল সেমিফাইনালেই। সৌদি আরবের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু করা লিওনেল মেসির দল যেন প্রতি ম্যাচেই জেগে উঠেছে নতুন করে।

এবার আর এক ম্যাচের অপেক্ষা। ডিয়েগো ম্যারাডোনার জুতায় পা গলাতে এবং ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের সেরার খাতায় নিজের নাম পাকা করতে লিওনেল মেসি আরও একবার সুযোগ পেলেন।

ফাইনালে পা রেখে আর্জেন্টিনার কোচ বলছেন, প্রথম ম্যাচের পরাজয়ের পর সমর্থকদের যেভাবে পাশে পেয়েছেন তারা, সেটিই তাদের উজ্জীবিত করেছে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াতে।

স্কালোনি বলেন, সৌদি আরবের কাছে হারার পর আমাদের সমর্থকদের, গোটা দেশের ও আমাদের মানুষের যে ভালোবাসা ও সমর্থন পেয়েছি, তা ছিল অসাধারণ। সেখান থেকেই আমরা শক্তি ও প্রেরণা পাই নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন