গত ইউরোর কথা ভুলে যাওয়ার কথা নয় বুকায়ো সাকার। ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে টাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করায় বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। পরিণত হয়েছিলেন খয়লনায়কে। চলতি ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে তরুণ এই ফরোয়ার্ডই শেষ পর্যন্ত প্রায়শ্চিত্ত করলেন অসাধারণ এক গোলে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফিরিয়ে। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা টাইব্রেকারে গড়ালে এবার আর কোনও ভুল করেননি। স্পট কিক থেকে গোল করে জয়ে অবদান রেখেছেন। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোলটি করার পর এখন গর্ব হচ্ছে সাকার। ম্যাচের পর জানিয়েছেন, অতীতের সেই কঠিন মুহূর্ত কীভাবে পার করেছেন।
আর্সেনাল তারকা ম্যাচের পর বলেছেন, ‘ওই রকম একটা ঘটনা থেকে ফিরে আসা ভীষণ কঠিন। আমি বরং নিজেকে শক্তি করতে ওই ঘটনাকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। আজ সুযোগটা নিতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।’
ম্যাচ নিয়ে তার মূল্যায়ন, ‘ভীষণ স্পেশাল। বিশেষ করে যেভাবে আমরা লড়াই করেছি। আমরা সর্বশেষ পেনাল্টি এই ইউরোতে নিয়েছিলাম। সবাই জানে সেখানে কী হয়েছিল। যেভাবে আমরা বাধা পার করেছি, তাতে সবাইকে নিয়ে গর্ব হচ্ছে।’
ওয়েম্বলির সেই ফাইনালে ১৯ বছর বয়স ছিল সাকার। ইতালির বিপক্ষে পেনাল্টি মিসের পর যেভাবে অনলাইনে আক্রমণের শিকার হচ্ছিলেন, তাতে তার মনোবল ভেঙে পড়তে পারতো। একই ঘটনা ঘটতে পারতো বাকি কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড়দের বেলাতেও। কিন্তু সাকা ওই ঘটনার পর দারুণ মনোবল নিয়ে পরিস্থিতি সামলে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছেন। যার পেছনে বড় সমর্থন ছিল ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের। এখন সাকা ভীষণ জনপ্রিয় এক ব্যক্তিত্ব। ২২ বছর বয়সে থ্রি লায়ন্সদের অন্যতম অভিজ্ঞদেরও একজন তিনি। ৩৮ ম্যাচে গোল করেছেন ১২টি।
সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৫ মিনিটে গোল হজম করার পর দলটিকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন সাকাই। ৫ মিনিট পর তার করা গোলে ম্যাচে প্রাণ ফেরায় ইংলিশরা। তার পর তো ম্যাচটা অতিরিক্ত সময় গড়িয়ে টাইব্রেকারে গেছে। সাকার প্রশংসা করে সাউথগেট বলেছেন, ‘সাকা ভীষণ সাহসী। আমাদের সেরাদের একজন। ফলে পেনাল্টি নেওয়ার বেলায় তাকে নিয়ে আমাদের মাঝে কোনও প্রশ্ন দেখা দেয়নি। কিন্তু আমরা জানি সে কীসবের মধ্যে দিয়ে গেছে। তার পর যেভাবে সেবা দিয়ে থাকে সেভাবেই দিয়েছে।’
সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ এখন নেদারল্যান্ডস। শুটআউটে পিকফোর্ডের বীরত্ব ইংলিশদের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। প্রথম শট সেভ করেছেন তিনি। ইংল্যান্ডের হয়ে জয়সূচক পেনাল্টি নেওয়া ট্রেন্ট অ্যালেক্সান্ডার আরনল্ড ইংল্যান্ডের গোলকিপারের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘শুরুতে পিকফোর্ডের অসাধারণ সেভ আমাদের মাঝে আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে।’