প্রস্তুত লড়াইয়ের মঞ্চ বার্লিনের বিখ্যাত অলিম্পিক স্টেডিয়াম। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল ইংল্যান্ড-স্পেনও প্রস্তুত। অপেক্ষার প্রহর গুনছেন ফুটবলপ্রেমীরা। কয়েক ঘণ্টা পর শেষ হচ্ছে প্রতীক্ষার ক্ষণ। আজ দিবাগত রাত ১টায়ই যে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল! যেখানে স্পেনের লক্ষ্য চতুর্থ শিরোপা, ইংল্যান্ড স্বপ্ন দেখছে টুর্নামেন্টে প্রথম সাফল্যের।
গত আসরে তো শিরোপার কাছ থেকে শূন্য হাতে ফিরে এসেছে থ্রি লায়নরা। ঘরের মাঠ ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে এগিয়ে থেকেও নিরাশ হয়েছে গ্যারেথ সাউথগেটের দল। ইংলিশদের কাঁদিয়ে লন্ডনে শিরোপা উৎসব করে ইতালি। এবার সেই দুঃখ ঘোচানোর সুযোগ হ্যারি কেন-বুকায়ো সাকাদের। তাদের দলটা দারুণ। অভিজ্ঞ আর তারুণ্যে ঠাসা।
স্পেনের দলটাও গোছানো। দলটিতে অভিজ্ঞ কয়েকজনই আছেন; কিন্তু লা রোহাদের এগিয়ে নেওয়ার আসল কাজটা করছেন দলটির তরুণ ফুটবলাররা। বিশেষ করে লামিন ইয়ামালের কথা আলাদাভাবেই বলতে হয়। ইউরোর সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে ম্যাচ খেলেছেন তিনি, গোল করেছেন ও অ্যাসিস্ট করেছেন। আগুনে ফর্মটা ফাইনালেও বয়ে আনতে চাইবেন ইয়ামাল।
ইয়ামাল ছাড়াও নিকো উইলিয়ামস ও দানি ওলমো আছেন স্বপ্নের ফর্মে। দ্বিতীয়জন তো গোল্ডেন বুট জয়ের দৌড়ে এগিয়ে আছেন, করেছেন তিন গোল। সমান তিনটি গোল আছে ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেইনেরও। এই দুজনের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য প্রদর্শনের লড়াইটি গড়ে দিতে পারে আজকের ফাইনালের ভাগ্য।
স্পেন যেমন তারুণ্যে ঠাসা দল, তেমনি ইংল্যান্ডও। থ্রি লায়নসদের হয়ে স্বপ্নের একটি আসর কাটাচ্ছেন জুড বেলিংহাম। গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে যে আগুনে ফর্মে ছিলেন, সেটা এবারের ইউরোতেও টেনে এনেছেন। ২১ বছর বয়সী এই বেলিংহাম স্পেনের বিপক্ষে ইংলিশদের ভরসার নাম হয়ে উঠতে পারেন। এ ছাড়া বুকায়ো সাকা, ফিল ফোডেন, ওয়াটকিসনরা চলে আসতে পারেন দৃশ্যপটে।
আন্তর্জাতিক ফুটবলের প্রথম ও একমাত্র দল হিসেবে ইউরো-বিশ্বকাপ-ইউরো জিতেছে স্পেন। সবশেষ মেজর টুর্নামেন্টে এক যুগ আগে সাফল্য পেয়েছিল তারা। এর পর থেকেই লা রোহারা একরকম ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে সুদিন ফেরানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে স্প্যানিয়ার্ডরা। আজ জিততে পারলে নতুন এক ইতিহাস হবে তাদের। জার্মানিকে ছাপিয়ে সবচেয়ে বেশিবার ইউরো জয়ের কীর্তি গড়বে স্পেন। দুই দলই সমান তিনবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এই টুর্নামেন্টে।
বিপরীতে কখনো ইউরোর চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি ইংল্যান্ড। তবে বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তি আছে তাদের। সেই দলটা ইউরো জিতবে তো দূরের কথা, তিন বছর আগে খেলেছে এই টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ফাইনাল। চতুর্থ দল হিসেবে ইউরোতে টানা দুই ফাইনালের নজির গড়তে যাচ্ছে তারা। এই দলটা আগের চেয়ে আরও পরিণত। ইংলিশ ফুটবলের চিরকালীন আক্ষেপ আজ বার্লিনেই ঘোচার স্বপ্ন দেখছেন সাউথগেটের শিষ্যরা।
কাজটা কঠিন। কেননা স্পেন আছে দারুণ ছন্দে। সেই তুলনায় অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। এবারের আসরে নক আউট পর্বের তিন ম্যাচেই দলটি জিতেছে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে।