‘সঠিকভাবে হিজাব না পরায়’ রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক মাশা আমিনী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গত কয়েকমাস ধরেই ইরান উত্তাল হয়ে আছে। সেই প্রতিবাদের ঢেউ লেগেছে বিশ্বকাপেও। ইরানের ম্যাচে গ্যালারিতে দেখা যাচ্ছে প্রতিবাদ। আজ ওয়েলসের বিপক্ষে ইরানের ২-০ গোলে জয় পাওয়া ম্যাচেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
তবে ইরানের ফুটবলাররা আজ তাদের জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে ঠোঁট মিলিয়েছেন।
মাশা আমিনির হত্যা এবং দেশে হিজাব বিরোধী আন্দোলনের প্রতিবাদে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীত গাননি ইরানের ফুটবলাররা। অনেকেই মনে করেছিলেন, দ্বিতীয় ম্যাচেও তাদের প্রতিবাদী মনোভাব বজায় থাকবে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে আজ শুক্রবার তাদের জাতীয় সঙ্গীত গাইতে দেখা গেছে। যদিও কাউকেউ স্বতঃস্ফুর্ত মনে হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, ইরান সরকারের চাপেই কি মাথা নোয়ালেন ফুটবলাররা?
প্রথম ম্যাচে ফুটবলারদের প্রতিবাদ দেখে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে হুঁশিয়ার করা হয়। একাধিক মন্ত্রী বলেছিলেন, পরের ম্যাচে একই জিনিস দেখা গেলে দেশে ফেরার পর ফুটবলাররা শাস্তির মুখে পড়বেন। এমনকি গ্রেপ্তারও করা হতে পারে। ইতিমধ্যেই সরকারের বিপক্ষে মুখ খুলে গ্রেপ্তার হয়েছেন ইরানের সাবেক ফুটবলার। এখনকার ফুটবলারদেরও একই হাল হতে পারে। মনে করা হচ্ছে, শাস্তির ভয়েই এই ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীতে গলা মিলিয়েছেন ফুটবলাররা।
গ্যালারিতে থাকা ইরানের সমর্থকরা অবশ্য আজও প্রতিবাদ করেছেন। জাতীয় সঙ্গীত বাজার সময় তারা তীব্র ব্যাঙ্গাত্মক শিস দিয়েছেন। পতাকা নাড়িয়ে এবং নারীদের স্বাধীনতার দাবিতে একাধিক পোস্টারও দেখা যায় মাঠে। অনেক নারী দর্শক সমর্থকই কান্নায় ভেঙে পড়েন। পুরুষ সমর্থকদেরও কাঁদতে দেখা যায়। এক নারী দর্শক মাশা আমিনির নাম লেখা জার্সি পরে এসেছিলেন। মুখ এমন ভাবে রাঙিয়েছিলেন, যাতে বোঝা যায় চোখ দিয়ে রক্ত পড়ছে। মাঠের বাইরেও ছিল প্রতিবাদ।