নাসিম রুমি: প্রাক মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচে হংকং একাদশকে ৪-১ গোলে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরে মেসির ইন্টার মিয়ামি। হংকং স্টেডিয়ামের গ্যালারি সেদিন কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়েছিল। টিকিটের আকাশছোঁয়া দাম উপেক্ষা করেও মানুষ এসেছিল।
কিন্তু তাদের সকল উচ্ছ্বাসে পানি ঢেলে দিয়েছে ইন্টার মায়ামি। যার খেলা দেখতে হংকংবাসীর এমন উন্মাদনা, সেই লিওনেল মেসিকে যে মাঠে এক মিনিটের জন্য নামানো হয়নি। যে কারণে মানুষ তো হতাশই, হতাশ হয়েছে হংকং সরকার পর্যন্ত!
ইন্টার মায়ামির হয়ে হংকং একাদশের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে লিওনেল মেসি না খেলায় হতাশা প্রকাশ করেছে হংকং সরকার। গত রবিবার(৪ ফেব্রুয়ারি) হংকং স্টেডিয়ামে এই প্রীতি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মেসি-সুয়ারেজকে ছাড়াই ৪-১ গোলে জয় পায় ইন্টার মায়ামি।
এই ম্যাচের জন্য আয়জকদের অনুদান দিয়েছিল হংকং সরকার। মেসি না খেলায় সেখান থেকে অর্থ কেটে রাখার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
প্রাক মৌসুম প্রস্তুতির জন্য এশিয়া সফরে থাকা ইন্টার মায়ামি এর আগে রিয়াদ সেশন কাপে আল হিলাল ও আল নাসরের কাছে হেরেছে। তবে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে মেসি সেভাবে খেলছেন না। আল নাসরের বিপক্ষে ম্যাচে মাত্র ৬ মিনিট মাঠে ছিলেন তিনি। শঙ্কা ছিল হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচে খেলা নিয়েও।
তবে এই ম্যচের আগে মেসিকে মাঠে নামানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ইন্টার মায়ামির কোচ টাটা মার্টিনো। ফলে ম্যাচটি দেখতে হংকংবাসীর মধ্যে উৎসাহের ঢেউ ওঠে। এএফপি জানায়, এক হাজার হংকং ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ হাজার টাকা) খরচ করে টিকিট কিনেছিলেন দর্শকেরা। ৩৮ হাজার ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামে তিল ধারণের ঠাঁই পর্যন্ত ছিল না।
কিন্তু তাদের হতাশ করে এক মিনিটের জন্যো মেসিকে নামানো হয়নি। লুইস সুয়ারেজকেও নামানো হয়নি। ফলে ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই রিফান্ড চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন দর্শকরা। দর্শকদের এমন হইচই দেখে মেসিকে না খেলানোয় ম্যাচ শেষে দর্শকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ইন্টার মায়ামি কোচ।
এদিকে ইএসপিএন জানিয়েছে, মেসিকে না খেলানোয় আয়োজক টেটলার এশিয়ার ওপর রুষ্ট হয়েছে হংকং সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মেসি না খেলায় সরকার ও ফুটবল–ভক্তরা আয়োজকদের কার্যক্রমে খুবই হতাশ। আয়োজকদের কাছে সব ফুটবল–ভক্ত ব্যাখ্যা পাওয়ার দাবি রাখে।’
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই ম্যাচ আয়োজনেরে জন্য হংকংয়ের মেজর স্পোর্টস ইভেন্টস কমিটি (এমএসইসি) ভেন্যু বাবদ ১০ লাখসহ মোট দেড় কোটি হংকং ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২১ কোটি ২৪ লাখ টাকা) অনুদান দিয়েছিল।
এখন আয়োজকদের অনুদান হিসেবে দেয়া অর্থ কেটে নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। বলা হয়, ‘এমএসইসি আয়োজকদের সঙ্গে হওয়া শর্তাবলির পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যার মধ্যে মেসি না খেললে তহবিলের পরিমাণ হ্রাস অন্তর্ভুক্ত।’
হংকং সরকারের এমন প্রতিক্রিয়ার জবাবে আয়োজক টেটলার এশিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করে হয়েছে যে, চোটের কারণে মেসি ও সুয়ারেজ যে খেলবেন না তা তাদের অবগত করা হয়নি।