বিশ্বকাপের শিরোপা আর্জেন্টিনায় পৌঁছে মেসি বাহিনী। স্থানীয় সময় সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মেসিরা দেশে পৌঁছান।
ট্রফি নিয়ে যখন মেসিরা যখন আর্জেন্টিনা পৌঁছায়, তখন সেখানে গভীর রাত। আর সেই রাতের তমশা ভেদ করেই বীরদের বরণ করতে ছোটে গণজোয়ার।
বিশ্বজয়ী বীরদের বরণ করে নিতে কোনও কমতিই রাখেনি আর্জেন্টাইনরা। স্লোগান আর গানে মেসিদের বীরত্বকে বরণ করে লাখ লাখ সাধারণ মানুষ। মেসিরাও ভালোবাসার প্রতিদান দিয়েছেন হাত নেড়ে, ছাদখোলা বাস থেকে।
ছাদখোলা বাসেই বুয়েন্স আয়ার্স থেকে সেন্ট্রাল ওবিলিস্কে যাওয়ার কথা ছিল আর্জেন্টিনা দলের। জনতার ঢল এতটাই বেশি ছিল যে, তা আর সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত ছাদখোলা বাসের শোভাযাত্রা বাতিল করা হয়। পরে তাদেরকে হেলিকপ্টারে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় এজেইজায় আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সদরদফতরে।
আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’ জানিয়েছে, বিশ্বকাপ জয়ের এই উৎসবে অংশ নিতে বুয়েন্স আয়ার্সের রাস্তায় প্রায় ৫০ লাখ জনতার ঢল নামে। ছাদখোলা বাসে আট ঘণ্টার যাত্রার পরিকল্পনা থাকলেও নিরাপত্তার কথা ভেবে ছেঁটে আনা হয়।
তাছাড়া মেসিদের বহনকারী বাস ব্রিজের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা আরও বেড়ে যায়। ব্রিজ থেকে লাফ দিয়ে মেসিদের বাসে পড়েছেন ভক্ত ও সমর্থকেরা।
আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম এমন কয়েকটি ঘটনার কথা জানিয়েছে।
ফেডারেল পুলিশ ক্যাডেট স্কুলের সামনে গিয়ে থামানো হয় বাস। এরপর পাঁচটি হেলিকপ্টারে করে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় আর্জেন্টিনা দলের খেলোয়াড়দের।
আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জনতার চাপে কমপক্ষে ১৮ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে আহতদের কারও অবস্থাই আশঙ্কাজনক নয়।
জানা গেছে, মেসিরা রিচেরি হাইওয়েতে আসার সময় ব্রিজের ওপর থেকে দু’জন সমর্থক লাফ দেন বাসের ছাদের ওপর। খেলোয়াড়েরা বারবার নিষেধ করলেও কাজ হয়নি। দু’জনের একজন বাসের ছাদে পড়েন। খেলোয়াড়েরা রক্ষা করেন যেন কোনও বিপদ না হয়। আরেক সমর্থক বাসের পেছনে কিছুক্ষণ ঝুলে থাকার পর ভারসাম্য হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যান।
ছাদখোলা বাসে খেলোয়াড়দের শোভাযাত্রা পরিকল্পনামতো না হওয়ায় ক্ষমা চেয়েছেন এএফএ সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, “যে নিরাপত্তা দল আমাদের সঙ্গে আছে, তারা ওবিলিস্কে অপেক্ষমাণ জনতার কাছে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি আমাদের। খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে হাজারবার ক্ষমা চাইছি আমি।”
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র গ্যাব্রিয়েল্লা চেরুত্তি টুইট করেন, “জনতার আনন্দ-উল্লাসের মাঝে রাস্তায় খেলোয়াড়দের নিয়ে আসা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হেলিকপ্টারে উড়িয়ে আনা হয়।”