English

26 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

জোগো বোনিতো এখন জাদুঘরে!

- Advertisements -

সর্বশেষ বিশ্বকাপে ব্রাজিল যে দল নিয়ে কাতার গিয়েছিল তাদের নিয়ে প্রত্যাশার পারদ ছিল উঁচুতে। দলের শক্তিমত্তা এতটাই ছিল যে মূল একাদশের বাইরে বেঞ্চে থাকা ফুটবলারদের নিয়েও আলোচনা ছিল তুঙ্গে।

এমন গুঞ্জনও ছিল যে সেলেসাওদের বেঞ্চ স্কোয়াডই যেকোনো দলকে হারাতে সক্ষম। শুরু থেকেই নান্দনিক ফুটবলের অপূর্ব প্রদর্শনী ছিল নেইমারদের পায়ে।

কিন্তু সেই ব্রাজিল দলের স্বপ্নযাত্রা থেমে যায় কোয়ার্টার ফাইনালে। সেই যে ব্যর্থতার শুরু।

হতাশার গ্লানি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে নানন্দিক সৌন্দর্যের ফুটবল খেলা দেশটি। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ব্যর্থতার ঝুড়িতে সর্বশেষ যোগ হয়েছে কোপা আমেরিকায় শেষ আট থেকে বাদ পড়া।

নক আউট পর্বে যেকোনো দলই ছিটকে যেতে পারে। তবে এবারের কোপা ব্রাজিলের নিম্নমানের ফুটবল হতাশ করেছে ভক্তদের।

একসময় হলুদ জার্সি গায়ে কিংবদন্তি পেলে-গারিঞ্চারা মাঠ মাতিয়েছেন। তাঁদের পায়ের জাদুতে সাম্বার ছন্দে সমর্থকদের মনে দোলা দিয়েছে।

কিংবদন্তিদের পথ ধরে সেলেসাওদের ঐতিহ্য ধরে রাখেন জিকো-সক্রেটিসরা। রোমারিও, রিভালদো, রোনালদোদের প্রজন্মও সুন্দর ফুটবলে বিকশিত করেছেন। এরপর কাকা-রোনালদিনহোদের পর ‘জোগো বোনিতো’র হাল ধরেন নেইমার-কৌতিনিয়োরা।

কিন্তু ব্রাজিলের সেই নান্দনিক ফুটবল কোথায় হারাল? সেই সৌন্দর্যের ছিটাফোঁটাও এবার চোখে পড়েনি, যেন ‘জাদুঘরে’ ঠাঁই নিয়েছে! কোপা আমেরিকা শুরুর আগেই ব্রাজিলের এই দলের সমালোচনা করে রোনালদিনহো যে কথাগুলো বলেছিলেন সেটাই সত্যি হলো। দলে নিবেদন ও দৃঢ়তার অভাব দেখতে পেয়েছিলেন ব্রাজিলের হয়ে ৫২ ম্যাচ খেলা সাবেক এই তারকা।

দেশের ভবিষ্যৎ তারকাদের এমন খেলা দেখে নিশ্চয় কষ্ট পেয়েছেন তিনি!

চোট থেকে সেরে ওঠার লড়াইয়ে থাকা নেইমারের অনুপস্থিতি ব্রাজিলের আক্রমণভাগে ফুটে ওঠে প্রবলভাবে। ভিনি-রদ্রিগো-এনদ্রিকরা বড় স্বপ্ন দেখালেও নেইমারহীন প্রথম বড় আসরেই নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ তাঁরা। চিরায়ত সুন্দর ফুটবলের প্রদর্শনী যে ছিল না তাঁদের পায়ে। ২৩ বছরের ভিনিকে ক্লাব ফুটবল ও জাতীয় দলে সহজেই আলাদা করা যায়। রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে কী দুর্দান্ত এই তরুণ! কিন্তু ব্রাজিলের জার্সি গায়ে চাপালেই মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখতে হয় তাঁকে! তুলনামূলক দুর্বল প্যারাগুয়ের বিপক্ষে জোড়া গোল ছাড়া কোস্টারিকা ও কলম্বিয়া ম্যাচে নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন তিনি। তার ওপর দুটি হলুদ কার্ড দেখায় শেষ আটে উরুগুয়ে ম্যাচে পান নিষেধাজ্ঞা। তাতে আরো দুর্বল হয়ে যায় সেলেসাওদের আক্রমণভাগ। ১৭ বছরের এনদ্রিককে ‘নতুন পেলে’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। জাতীয় দলে যাত্রাটা তাঁর অবিশ্বাস্য হলেও বড় মঞ্চে ব্যর্থ হয়েছেন। উরুগুয়ে ম্যাচে ৯০ মিনিট মাঠে থেকে সঠিক পাস দিয়েছেন মাত্র দুটি। গোলে শট নিয়েছেন স্রেফ একটি। যদিও তাঁর সক্ষমতা ও সম্ভাবনা নিয়ে চূড়ান্ত মন্তব্য করা ঠিক হবে না। শুধু আক্রমণভাগ নয়, মধ্যমাঠের সঙ্গে ব্রাজিলের রক্ষণভাগও হতাশায় ডুবিয়েছে। চাপের মুহূর্তে তালগোল পাকিয়েছেন এঁদের মিলিতাও-পাকেতারা। মাঠে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ারও বড্ড অভাব ফুটে উঠেছে। নিজেরাই যেন নিজেদের বুঝতে পারছিলেন না।

২০২২ কাতার বিশ্বকাপের পর থেকেই ছন্নছাড়া ব্রাজিল দল। তিতের দায়িত্ব ছাড়ার পর প্রায় দেড় বছর স্থায়ী কোচই ছিল না সেলেসাওদের। তাতে মাঠের ফুটবলেও ধুঁকতে থাকে হলুদ জার্সিধারীরা। এরপর এ বছরের জানুয়ারিতে ব্রাজিলের দায়িত্ব নেন দোরিভাল জুনিয়র। নতুন করে দল সাজানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তাঁর অধীনেও ভাগ্য বদলায়নি। প্রথম বড় ‘অ্যাসাইনমেন্টে’ই ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে এসে ভবিষ্যতের বার্তা না দিয়ে বরং এলোমেলো ফুটবলে ডুবিয়েছে হতাশায়। আক্রমণভাগে বিবর্ণ দলটিকে স্বরূপে ফেরাতে নেইমারের বিকল্প দেখছে না অনেকে। ব্রাজিলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি (৭৯) গোল করা এই প্লে-মেকারের ফেরার অপেক্ষায় তাই সমর্থকরাও। সেই সঙ্গে নতুন প্রজন্মের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের বীজ ছড়িয়ে দিতে পারলে স্বরূপে ফিরতে পারে ব্রাজিলের নান্দনিক ফুটবলের প্রদর্শনী।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন