কাতার বিশ্বকাপ ঘিরে গত চার বছরের বাণিজ্যিক চুক্তি থেকে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ আয় করেছে বৈশ্বিক ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। রোববার (২০ নভেম্বর) তারা জানিয়েছে, গত চার বছরে স্পন্সরশিপ থেকে ৭৫০ কোটি মার্কিন ডলার আয় হয়েছে, যা অভূতপূর্ব। এর আগের বিশ্বকাপ, অর্থাৎ রাশিয়া বিশ্বকাপ ঘিরে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চার বছরে ফিফা যা আয় করেছিল, কাতার বিশ্বকাপ থেকে আয় হয়েছে তার চেয়ে অন্তত ১০০ কোটি ডলার বেশি।
ফিফার এই অতিরিক্ত আয় এসেছে মূলত কাতারিদের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তির মাধ্যমে। এবারের বিশ্বকাপ ঘিরে ফিফার শীর্ষস্থানীয় স্পন্সর হিসেবে নাম লিখিয়েছে কাতার এনার্জি। নতুন তৃতীয়-স্তরের স্পন্সরদের মধ্যে রয়েছে কাতারি ব্যাংক কিউএনবি এবং টেলিকমিউনিকেশন ফার্ম ওরেডু।
এ বছর আর্থিক প্ল্যাটফর্ম ক্রিপ্টো ডটকমের সঙ্গে দ্বিতীয়-স্তরের স্পন্সরশিপ চুক্তি করেছে ফিফা। এছাড়া, এক দশকেরও বেশি সময় পর মার্কিন স্পন্সর হিসেবে ব্লকচেইন সেবাদানকারী কোম্পানি অ্যালগোরান্ডকে পেয়েছে তারা।
রাশিয়া ও কাতার বিশ্বকাপের জন্য মূল সম্প্রচার চুক্তি সই হয়েছিল সেপ ব্ল্যাটার ফিফার প্রেসিডেন্ট থাকাকালে। এছাড়া ২০১১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স ও কাতারি সম্প্রচারমাধ্যম বিইন স্পোর্টসকে চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করেছে তারা।
বিশ্বকাপ ঘিরে চার বছর পরপর চুক্তি পুনর্বিন্যাস করে থাকে ফিফা। ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছিল রাশিয়া বিশ্বকাপের হিসাব চক্র। ওই চার বছরে স্পন্সরদের কাছ থেকে ৬৪০ কোটি ডলার আয় হয় ফিফার।
কাতার বিশ্বকাপ শেষে পরের চার বছরে বৈশ্বিক ফুটবল সংস্থাটির আয় প্রথমবারের মতো এক হাজার কোটি ডলার ছাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর পেছনে মূল অবদান হবে নারী ফুটবল নিয়ে ফিফার নতুন অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-মেক্সিকো বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা বাড়িয়ে ৪৮টি করার সিদ্ধান্তের। এবারের বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে মোট ৩২টি দল।
আয়োজক দেশগুলোর কমিটি গঠন, প্রাইজমানি, ভ্রমণ, টিম ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার মতো বিভিন্ন কাজে অর্থ দেয় ফিফা। বিশ্বকাপ শেষ হলে আয়োজক দেশকে ক্রীড়াখাতের উন্নয়নে বিশেষ উত্তরাধিকার তহবিলও দিয়ে থাকে সংস্থাটি।
কাতার বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন দল পুরস্কার হিসেবে পাবে ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর গোটা আয়োজনে মোট অর্থ পুরস্কারের পরিমাণ প্রায় ৪৪ কোটি ডলার।