বিশ্বজুড়েই সোনার তৈরি অলঙ্কারের ব্যাপক কদর। সোনা পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন।
তবে আধুনিককালে এই ধারণা বিলুপ্ত প্রায়। বর্তমানে আকুপাংচার চিকিৎসায় স্টিলের সুঁচ ব্যবহার করা হয়।
চীনের এলকেমিস্টরা মনে করেন, সোনা পান করলে এবং খাওয়ার কাজে সোনার বাসন ব্যবহার করলে দীর্ঘায়ু লাভ করা যায়। খাবারকে আকর্ষণীয় করে তুলতে এবং সোনার স্বাস্থ্যগুণ দ্বারা উপকৃত হতে আজও বিভিন্ন খাবারে সোনার পাত ব্যবহার করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, খাঁটি সোনায় প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ফলে এটি পরিধান করলে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের উপসর্গের সময়ে উল্লেখযোগ্যহারে উপশম হয়। বিংশ শতাব্দীর আগে হৃদরোগ, গুটি বসন্ত রোগের চিকিৎসায় সোনা ব্যবহার করা হতো। বলা হয়ে থাকে, খাঁটি সোনা কোনো সংক্রমণ বা ক্ষত স্থানে রাখলে এটি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
এছাড়া সোনা রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় উন্নতি ঘটায় ফলে শরীরের সব অংশে অক্সিজেন পৌঁছাতে সাহায্য করে। সোনার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য শরীরে ব্যথা এবং শরীরে ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। এইভাবে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাচীনকাল থেকে মানসিক চাপ দূর করতে খাঁটি সোনার ব্যবহার হয়ে আসছে।
আধুনিক মেডিক্যাল গবেষণা অনুযায়ী, খাঁটি সোনা কোষের পুনর্গঠনে সাহায্য করে। শরীরের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া করে না এবং সহজেই শরীরের সঙ্গে মানিয়ে যায় বলেই দাঁতের আর্টিফিশিয়াল ক্রাউন, ব্রিজ, দাঁতের ফিলিং চিকিৎসায় অনেক সময় সোনা ব্যবহার করা হয়।
জার্মান বিজ্ঞান ভিত্তিক একটি জার্নালে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেন, জেব্রা ফিসের মস্তিষ্কের মধ্যে সোনার টুকরা বসিয়ে তারা দেখেন সেটি ওষুধের কার্যকারিতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।
টিউমার বা ক্যান্সার ধরা পড়ার পর কেমোথেরাপি দেওয়ার সময় শরীরের অন্য জায়গায় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থাকে। সোনার ছোট কণিকার মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ বা টিউমার সারাতে সাহায্য করতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। যদিও কোনো মানবদেহে এখনও পরীক্ষা করেননি তারা।
তবে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, কেমোথেরাপির সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে সোনার কণা বেশ ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।