বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় শীর্ষ দশে স্থান অর্জন করেছে এথেন্সের ‘অ্যাক্রোপলিস’। অনলাইন গেমিং কোম্পানি বেটওয়ের পরিচালিত সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে এ তথ্য।
বেটওয়ের বিশেষজ্ঞরা তাদের বিশ্লেষণের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলিকে নির্বাচন করেছেন। তারা নির্বাচিত ১০৯টি শহর, প্রাকৃতিক বা সাংস্কৃতিক স্থান শ্রেণিবদ্ধ করেছে।
তাদের অনুসন্ধান অনুসারে, গ্রিসের অ্যাক্রোপলিস বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে ঐতিহাসিক স্থানের মধ্যে ৭তম স্থানে রয়েছে। ১.৫ মিলিয়নেরও বেশি ইনস্টাগ্রাম হ্যাশট্যাগ এই স্থানকে নির্বাচিত করে। তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারতের তাজমহল। তাজমহলে প্রায় ২.৪ মিলিয়ন হ্যাশট্যাগ রয়েছে।
পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে থাকা বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রাচীনতম প্রত্নতাত্তিক স্থান এই অ্যাক্রোপলিস। সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে দেশটির সংস্কৃতি মন্ত্রী লিনা মেন্ডোনি অ্যাক্রোপলিসে বর্তমান গড়ে দৈনিক ২৩ হাজার পর্যটক পরিদর্শন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এটিকে একটি বিশাল সংখ্যা হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তাই এবার অ্যাক্রোপলিসে প্রতিদিন ২০ হাজার পর্যটকের মধ্যে সিমাবদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এথেন্সের একটি চুনাপাথরের পাহাড়ের ওপর অবস্থিত অ্যাক্রোপলিস প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই রয়েছে। অ্যাক্রোপলিসে ঐতিহ্যবাহী অনেক কিছুই রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রাজাদের বাড়ি, দুর্গ, ধর্মীয় উপাসানালয় অন্যতম। এগুলোই বর্তমানে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ।
অ্যাক্রোপলিস কী
গ্রিক ভাষায় অ্যাক্রোপলিস শব্দের অর্থ সুউচ্চ শহর। গ্রিসের সবচেয়ে উঁচু ভূমিগুলোতে পাথরনির্মিত দুর্গের মধ্যে একটি হলো এথেন্সের অ্যাক্রোপলিস।
অ্যাক্রোপলিসের বয়স কত?
পুরাতত্ত্ববিদ ও ইতিহাসবিদদের মতে, অ্যাক্রোপলিসের সমতল শীর্ষটি ব্রোঞ্জ যুগ থেকে শুরু হওয়া হাজার হাজার বছর আগে নির্মিত। ব্রোঞ্জ যুগের শেষের দিকে মাইসেনিয়ানরা এ এলাকায় চাষ শুরু করার আগে অ্যাক্রোপলিসে কী ঘটেছিল তার কোনো নথিভুক্ত ইতিহাস নেই।
ঐতিহাসিকরা বিশ্বাস করেন, মাইসেনিয়ানরা স্থানীয় শাসক ও তাদের পরিবারের থাকার জন্য অ্যাক্রোপলিসের ওপরে ১৫ ফুট পুরু ও ২০ ফুট উঁচু একটি বিশাল প্রাচীর বেস্টিত একটি যৌগ তৈরি করেছিল। বহু বছর পরে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে দেবী এথেনার সম্মানে এথেনিয়ানরা পাহাড়ের উত্তর-পূর্ব দিকে চুনাপাথর দিয়ে তৈরি একটি ডোরিক মন্দির তৈরি করে। যা ব্লুবিয়ার্ড মন্দির নামে পরিচিত।
এথেনাকে উৎসর্গ করা আরেকটি মন্দিরও একই শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। তাছাড়া এখানে ছিল গ্রিক পুরাণে বর্ণিত গর্ভবতী মায়েদের দেবী আর্টেমিস ব্রাউরোনিয়ার মন্দির।