বিশ্বজুড়ে নানা সম্প্রদায়ের মানুষের আচার-আচরণ, রীতিনীতি ভিন্ন ভিন্ন হলেও ফোন ধরার পরের সম্ভাষণ মোটামুটি সবারই এক। সেটা হচ্ছে হ্যালো! বিশ্বের ৯৮ শতাংশ মানুষই ফোন ধরার পর প্রথম শব্দটি বলেন ‘হ্যালো।’ কীভাবে এই সম্ভাষণ বা অভিবাদনের প্রচলন শুরু হলো? জেনে নিন সেটাই।
টেলিফোন সর্বপ্রথম আবিষ্কার করা হয় ১৮৭৬ সালে। আর এর ঠিক এক বছর পর ১৮৭৬ সালের ১০ মার্চ আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল সর্বপ্রথম তার সহকারীকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু হ্যালো বলেননি তিনি। সেই সময় তিনি সম্ভাষণের জন্য ‘আহয়ই’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। নাবিকেরা সম্ভাষণ হিসেবে এই শব্দ ব্যবহার করতেন। শব্দটি বেশ কিছু দিন ব্যবহার হয়েছিল টেলিফোনে সম্ভাষণের জন্য। গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করলেও হ্যালো বলার প্রচলন তৈরি করেছিলেন অন্য এক ব্যক্তি। আর তিনি হলেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী, বৈদ্যুতিক আলোর আবিষ্কারক থমাস আলভা এডিসন।
টেলিফোন আবিষ্কার হওয়ার শুরুর দিকে কোনও রিংয়ের ব্যবস্থা ছিল না। একপাশের টেলিফোন লাইনের সঙ্গে অপর পাশের লাইন প্রায় সব সময়েই যুক্ত থাকতো। অর্থাৎ কল ডিসকানেক্টের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। সব সময়ই একটি লাইন কানেক্ট করা থাকতো, প্রয়োজনের সময় কথা বলা হতো দুই পাশ থেকেই। সেই সময় একপাশের ব্যক্তির সঙ্গে অপর পাশের ব্যক্তির কথা বলার সময় কথোপকথন শুরু করার জন্য সম্ভাষণের প্রয়োজন দেখা দিল। এরপর ১৮৭৭ সালের ১৮ জুলাই থমাস আলভা এডিসন ‘প্রিন্সিপাল অব রেকর্ডেড সাউন্ড’ আবিষ্কারের পরীক্ষানিরীক্ষার কাজে যে শব্দটি বারবার উচ্চস্বরে ব্যবহার করেছিলেন তা হলো হ্যালো। আর এই শব্দটিই তিনি প্রথম তার উদ্ভাবিত ‘পেপার সিলিন্ডার ফনোগ্রাফ’ যন্ত্রে রেকর্ড করেছিলেন।
অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি অনুযায়ী, সর্বপ্রথম হ্যালো শব্দটির ব্যবহার লিপিবদ্ধ হয় ১৮২৭ সালে যা প্রায় ২০০ বছর আগে। পুরনো অনেক নিয়ম বদলে গেলেও সবকিছুর বাধা পেরিয়ে আজও সারা বিশ্বে ফোনে সম্ভাষণের প্রচলিত শব্দ হয়ে থেকে গেছে এই ‘হ্যালো।’