English

20 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ৩০, ২০২৫
- Advertisement -

এক দেশে খেয়ে অন্য দেশে ঘুম!

- Advertisements -

একই বাড়িতে থেকে খেলেন এক দেশে। আর ঘুমাতে গেলেন অন্য দেশে। অথচ আপনাকে কষ্ট করে কোথাও যেতেই হল না। এমনটা আবার হয় নাকি! হ্যাঁ, এমন বিচিত্র অভিজ্ঞতারই মুখোমুখি হতে হলে আপনাকে যেতে হবে মিয়ানমার সীমান্তে ভারতের শেষ গ্রাম লংওয়াতে।

নাগাল্যান্ডের মন জেলার অন্যতম বড় গ্রাম লংওয়া। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়া এই গ্রাম ঘিরে জনমানসে আগ্রহের সীমা নেই। এই গ্রামের বুক চিরেই গেছে ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত। অর্থাৎ, গ্রামের এক দিকটি ভারতের, অপর প্রান্তটি মিয়ানমারের।

এই গ্রামের বাসিন্দারা দু’দেশেরই নাগরিকত্ব পান। এমনকি, এক দেশ থেকে অন্য দেশে গেলে ভিসা লাগে। কিন্তু এই গ্রামের ক্ষেত্রে সেটির কোনো দরকার পড়ে না।

এক দেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে যাতায়াতে অনেক বিধিনিষেধ থাকে। তবে এই গ্রামের ক্ষেত্রে তেমন কোনো বাধা নেই। অনায়াসে যখন খুশি ওই গ্রামের বাসিন্দারা সীমান্ত পেরিয়ে অবাধে যাতায়াত করতে পারেন।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, গ্রামের প্রধান যিনি, তার বাড়ির মধ্যে দিয়েই গিয়েছে আন্তর্জাতিক সীমানা। বলা হয়ে থাকে, গ্রামের প্রধান যে ঘরে খান, সেটি ভারতের মধ্যে পড়ে। আর যে ঘরে ঘুমান, সেটি মিয়ানমারের মধ্যে পড়ে!

শুধু গ্রামের প্রধানই নন। অনেক গ্রামবাসীর বাড়ির মধ্যে দিয়েও গিয়েছে আন্তর্জাতিক সীমান্ত। যার ফলে তাদের রান্নাঘর এক দেশে। আর শোয়ার ঘর অন্য দেশে পড়েছে।

এই গ্রামের প্রধানকে বলা হয় ‘অ্যাং’। ৭০টিরও বেশি গ্রামের রাজ্যপাট সামলান তিনি। তার স্ত্রী ৬০ জন। মিয়ানমার ও অরুণাচলপ্রদেশে ৭০টিরও বেশি গ্রামে তাদের আধিপত্য রয়েছে।

লংওয়া হল বিখ্যাত কোনিয়াক উপজাতির বাস। বর্তমানে এই উপজাতির অধিকাংশ মানুষ থাকেন মিয়ানমারে।

অতীতে এই উপজাতির বাসিন্দাদের নিয়ে রীতিমতো আতঙ্ক ছিল এলাকায়। জমি দখলের জন্য আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের উপর তারা আক্রমণ চালাতেন। শত্রুদের শিরশ্ছেদ করতেন তারা।

এই গ্রামে উপজাতির বাসিন্দাদের বাড়ি সাধারণত রয়েছে পাহাড়ের উপর। যাতে তারা সহজেই উপর থেকে শত্রুদের উপর নজর রাখতেন। ১৯৪০ সালে শিরশ্ছেদ করার প্রথা নিষিদ্ধ করা হয়।

লংওয়া গ্রামে রয়েছে অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। চারদিকে সবুজের সমারোহ। ওই এলাকায় দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে ডোয়াং নদী, নাগাল্যান্ড বিজ্ঞান কেন্দ্র, হংকং মার্কেট, শিলোই লেক।

সবুজে ঘেরা নির্মল পরিবেশের ওই গ্রামে ঘুরতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হল অক্টোবর থেকে মার্চ। এই সময় নাগাল্যান্ডে নানা উৎসব ও মেলার আয়োজন করা হয়।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন